সংবাদ ডেস্ক: আগামী চার বছরের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্যের দায়িত্ব পেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম। ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর ১১(১) ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের আদেশ জারি করা হয়। উপাচার্য নিয়োগ আদেশে বলা হয়, ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ হতে চার বছর হবে। উক্ত পদে তিনি বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতাদি প্রাপ্য হবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়েল প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যেকোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। এ ব্যাপারে নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, আমাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মনোনীত করায় রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। অতীতে যেমন শিক্ষার্থী, সহকর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতা পেয়েছি ভবিষ্যতেও এ ধারা কামনা করছি। সকলকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণে কাজ করতে চাই। সকলের প্রচেষ্টায় এ বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বমানের হয়ে উঠবে সেই আশা করি। এর আগে গত ১২ আগস্ট উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট আটজন শিক্ষক উপাচার্য পদে নির্বাচন করেন। তার মধ্যে অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম ৪৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। এছাড়া অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আমির হোসেন ৪৮ ভোট পেয়ে প্রথম হন এবং পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার ৩২ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া এ তিনজনের নাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে পাঠানো হয়। নির্বাচিত তালিকা থেকে অধ্যাপক নূরুল আলমকে উপাচার্য মনোনীত করেন রাষ্ট্রপতি। উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম ১৯৮০ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮২ সালে তিনি একই বিভাগে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৬ সালে তিনি সহকারী অধ্যাপক, ১৯৯২ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৯৭ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কর্মজীবনে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও অর্থ কমিটির সদস্য, গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন, মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভাগীয় সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও সভাপতি এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও সভাপতি হিসেবেও নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০১৮ সালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) নিযুক্ত হন। ২০২২ সালের ১ মার্চ তৎকালীন উপাচার্য ফারজানা ইসলামের মেয়াদ পূর্ণ হলে ২ মার্চ থেকে তিনি উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরবর্তীতে ১৭ এপ্রিল এক আদেশে তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সাময়িকভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং একই দিন দুপুরে তিনি উপাচার্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
Leave a Reply