সংবাদ ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেরুয়াগামী সড়কের মওলানা ভাসানী হল সংলগ্ন স্থানে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. জাহিদ হাসান। তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত জাহিদকে ওই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়ার পর এখন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আনিস বলেন, ‘জাহিদের এখনও জ্ঞান ফেরেনি। তার মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথার একটি হাড় ভেঙে গেছে। এখন আমরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। সকালে এমআরআই করে বিস্তারিত বলা যাবে।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে শহীদ রফিক-জব্বার হলে যাচ্ছিলেন জাহিদ ও তার কয়েকজন সহপাঠী। মওলানা ভাসানী হলের কাছে আসলে পেছন থেকে মোটরসাইকেল এসে ধাক্কা দেয় তাকে। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন দর্শন বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফেরদৌস মাহমুদ। একই সড়ক ধরে গেরুয়া বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম ব্যাচের ক্লাস শুরু হয়েছে। মাত্র দুদিন আগে ক্যাম্পাসে আসা একজন শিক্ষার্থীর এমন দুর্ঘটনার শিকার হওয়া নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করছেন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কিত তারা। সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সভাপতি রাকিব আহমেদ বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে একজন শিক্ষার্থী মেধার প্রমাণ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ক্যম্পাসে আসার দুইদিনের মাথায় তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে বেপারোয়া গতিতে গাড়ি চালানো নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা চাই, এই দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। গাড়ির লাইসেন্স ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো বিষয়গুলো যাচাই করে প্রচলিত আইনে যেন সঠিক বিচার হয় তার জোর দাবি জানাচ্ছি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আহত ছেলেটির ব্যাপারে খোঁজ-খবর রাখছি। আমরা দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখব। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আহ্বান করবো, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রিত গতিতে এবং সাবধানের সঙ্গে চালাতে। যাতে করে একজন শিক্ষার্থী আরেকজনের বিপদের কারণ না হই।’ এদিকে ক্যাম্পাসের সড়কে শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলছিল।
Leave a Reply