1. kamruzzaman78@yahoo.com : kamruzzaman Khan : kamruzzaman Khan
  2. ssexpressit@gmail.com : savarsangbad :
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন

আশুলিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠছে মহিষের খামার

  • আপডেট সময় : বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩

আশুলিয়া প্রতিনিধি : তুলনামূলক দাম ও স্বাস্থ্যঝুঁকি কম থাকায় দেশে দিনদিন বাড়ছে মহিষের মাংসের চাহিদা। অথচ বছর কয়েক আগেও গরুর সঙ্গে মহিষের মাংস মিলিয়ে দিত অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাতে লাভ হতো বেশি কারণ তখন মহিষের মাংসের দাম ছিল কম, প্রায় অর্ধেক। তবে বর্তমানে কোরবানিতে বিক্রি বেড়েছে মহিষের। তাই দেশে বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে উঠছে মহিষের খামার। ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় কাইয়ুম অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড দেশের সবচেয়ে বড় মহিষের খামার। বর্তমানে এখানে ৩০০ মহিষ রয়েছে। পাশাপাশি আছে ১৩০টি বলদ গরু, ৩০ থেকে ৩৫টি গাভি, প্রায় ৩০টি দুম্বা আর বেশ কিছু ছাগল। পশুগুলো দেখভালে নিয়োজিত প্রায় ৩০ জন কর্মী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খামারের ভেতরে বিশাল জায়গাজুড়ে চারটি আলাদা শেডে বিক্রির উপযোগী মহিষগুলো রাখা। এর মধ্যে ভারতের গুজরাটের জাফরাবাদী জাতের বিশাল দুটি মহিষ সহজেই নজর কাড়ে। একেকটির ওজন প্রায় এক হাজার ১০০ কেজি। এর একটি এরই মধ্যে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কাইয়ুম অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড কর্তৃপক্ষ জানায়, খামারেই ওয়েট স্কেল বসানো আছে। ক্রেতাদের সামনেই ওজন করে পশু বেচাকেনা হয়। সাধারণত ৩০০ থেকে ৬০০ কেজির মহিষ বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৪৮০ টাকায়। এর চেয়ে বড় আকারের মহিষগুলো দামাদামি করেই কিনে থাকেন ক্রেতারা। অনলাইনেও গরু বা মহিষ কেনার সুযোগ রয়েছে। মহিষের খামার গড়তে কেন আগ্রহী হলেন- এমন প্রশ্নে খামার মালিক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, গরুর চেয়ে মহিষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, তাই রোগ-ব্যাধি কম হয়। মহিষের মাংস গরুর চেয়ে নিরাপদ বলে এর ভোক্তাও বাড়ছে। এ ছাড়া মহিষ পালনে খরচের তুলনায় বিক্রিতে লাভ থাকে বেশি। তাই আমিও মহিষ পালন শুরু করেছি। তাঁর মতে, ভারত থেকে মহিষের যে প্রক্রিয়াজাত মাংস আসছে, সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। এখন দেশেই মহিষের বাণিজ্যিক খামার গড়ে উঠছে। ফলে এসব মাংস আমদানি বন্ধ করলে দেশ ও দেশের খামারিরা উপকৃত হবে। সাভারের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক শাহেদ হোসেন ‘দ্যা ডেইলি মেসেঞ্জার’কে জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মহিষের মাংসের চাহিদা বাড়ছে। গুণগত মানের দিক দিয়ে গরুর মাংসের তুলনায় মহিষের মাংস কিছুটা শক্ত, তবে বেশি স্বাস্থ্যসম্মত। উভয় মাংসের স্বাদ প্রায় একই রকম হলেও মহিষের মাংসে প্রোটিন তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। মহিষের মাংসে ২ শতাংশের কম কোলেস্টেরল থাকে অথচ গরুর মাংসে ৪ শতাংশেরও বেশি। অন্যদিকে গরুর তুলনায় মহিষের মাংস কম লাল হলেও মহিষের মাংসে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সচেতনরা মহিষ পছন্দ করছে। মহিষের দুধে উপকারী মিল্ক ফ্যাটও থাকে গরুর প্রায় দ্বিগুণ। অল্প খরচের হাউজিং ম্যাটেরিয়ালে মহিষ পালন করা সম্ভব। তাই খামারগুলোতে মহিষ পালন বাড়ছে। সারা দেশে খামারে পালনকৃত মহিষের সংখ্যা জানতে চাইলে তিনি জানান, খামারকে নিবন্ধনের আওতায় আনা শুরু হয়েছে মাত্র। ধীরে ধীরে সব খামার নিবন্ধিত হয়ে গেলে আসল সংখ্যাটা বোঝা যাবে। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহিষ উৎপাদন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান গৌতম কুমার দেব ‘দ্যা ডেইলি মেসেঞ্জার’কে বলেন, আগে দেশে মহিষের মাংস গরুর মাংস হিসেবে বিক্রি হতো, এখন তো মহিষকে মহিষ হিসেবেই বিক্রি করা হচ্ছে। অর্থাৎ চাহিদা বাড়ছে। মহিষ আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয়। তাই খামারিরাও এদিকে ঝুঁকছেন। গৌতম কুমার মনে করেন, শুধু একটি উৎসের ওপর নির্ভর না করে আরো উৎস তৈরি করা বুদ্ধিমানের কাজ। তেমনি মহিষের উৎপাদন বাড়ানো গেলে গরুর ওপর নির্ভরশীলতা কিছুটা হলেও কমবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ :