আশুলিয়া প্রতিনিধি: আশুলিয়ায় প্রেম সম্পর্কের পর বিয়ে করতে চাপ দেওয়ায় পলি (৩১) নামের এক পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর লাশ গুম করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করেছিলো আসামিরা। কিন্তু সেই রহস্য উদঘাটন করে মাত্র কয়েক ঘন্টার ভেতর তিন আসামিকে আটক করে র্যাব-৪৷ ২১ অক্টোবর শুক্রবার বিকালে র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর নবীনগর ক্যাম্পে এক প্রেস ব্রিফিং এ এসব কথা জানান র্যাব-৪ সিপিসি-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোঃ আরিফ হোসেন। আটকরা হলেন- শেরপুর জেলার সদর থানার চরদিবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে মোঃ রেজাউল ইসলাম (৪২), একই জেলার ঝিনাইগাতী থানার দড়কালি নগর গ্রামের মৃত সমির উদ্দিনের ছেলে মোঃ সামিউল (৩২) ও টাঙ্গাইল জেলার নাগরপর থানার শিক কুন্ড গ্রামের মোঃ জলিল মিয়ার ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম (৪৯)। নিহত পলি ঝালকাঠি সদর থানার পাঞ্জিপুথিপাড়া গ্রামের মৃত হাশেমের মেয়ে পলি৷ তিনি আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।র্যাব-৪ (সিপিসি-৩) মানিকগঞ্জের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হোসেন বলেন, গত ১১ অক্টোবর আশুলিয়ার হাকিমপট্টি এলাকার বাসিন্দা পলমল গার্মেন্টের শ্রমিক পলি বেগম কারখানা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। অনেক জায়গায় খোঁজ করেও তার সন্ধান পায়নি সহকর্মী ও স্বজনরা। পরে ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীখন্ডিয়া এলাকার একটি নির্জন স্থান থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে গভীর কূপে গলিত মরদেহ দেখতে পায় পলমল গার্মেন্টেের শ্রমিকরা। পরে আশুলিয়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় পড়নের কাপড় দেখে তার স্বজনরা মরদেহটি পলির বলে সনাক্ত করে। পরে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এঘটনায় নিহতের বোন একটি অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করলে ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব-৪ । হত্যার মোটিভের বিষয়ে তিনি বলেন, দুই সন্তানের মা পলির সাথে প্রতিবেশী চায়ের দোকানদার রেজাউলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু রেজাউলের দুই স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও পলি বিয়ের জন্য তাকে চাপ দিয়ে আসছিলো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাদ শুরু হলে পলিকে হত্যার পরিকল্পনা করে রেজাউল। নিজের চায়ের দোকানে বসেই রিকশাচালক বন্ধু সামিউল ও সফিউলকে নিয়ে পলিকে হত্যার ছঁক আকে তারা। পরে ১১ অক্টোবর বিয়ের কথা বলে পলিকে গার্মেন্টস ছুটির পর মুঠোফোনে শ্রীখন্ডিয়া এলাকায় ডেকে নেয় রেজাউল। পরে রেজাউল ও তার দুই বন্ধু মিলে পলিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে জবাই করে লাশ পরিত্যক্ত গভীর কূপে ফেলে দেয়। র্যাব-৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার মাজাহারুল ইসলাম বলেন, প্রযুক্তির সহায়তা ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে হত্যায় অভিযুক্তদের সনাক্ত করা হয়। শুক্রবার সকালে আশুলিয়ার শ্রীখনন্ডিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে রেজাউল ও তার দুই সহযোগীকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে। শুক্রবার সন্ধায় আসামিদের আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।
Leave a Reply