আশুলিয়া প্রতিনিধি : আশুলিয়ায় মোবাইলে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলার সন্দেহের জেরে স্ত্রী তানজিলা আক্তারকে (২৯) বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন তার স্বামী জামাল উদ্দিন (৩৫)। প্রায় আড়াই বছর পর ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ গাইবান্ধা থেকে ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ২০ জুলাই বুধবার প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পিবিআই এ তথ্য জানিয়েছে। মঙ্গলবার গাইবান্ধা জেলার সদর থানা এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা জামাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। নিহত তানজিলা আক্তার গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার সিচা দর্জিপাড়া গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে। ১০ বছর আগে তার বিয়ে হয় গাইবান্ধা জেলার সদর থানার মঠবাজার গ্রামের জাহের উদ্দিনের ছেলে জামাল উদ্দিনের সঙ্গে। জোনাকি (৮) নামে তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তানজিলা আক্তার ও তার স্বামী জামাল চাকরির খোঁজে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় আসেন। আশুলিয়া থানা এলাকার শিমুলিয়া ইউনিয়নের টেংগুরী কোনাপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি শুরু করেন তানজিলা, স্বামী জামাল রিকশা চালাতেন। পিবিআই জানায়, স্ত্রী তানজিলা আক্তারের মোবাইলে কথা বলা নিয়ে সন্দেহ করতেন তার স্বামী জামাল উদ্দিন। ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি জামাল বাইরে থেকে এসে দেখেন স্ত্রী ফোনে কথা বলছেন। এ নিয়ে প্রথমে কথা কাটাকাটি পরে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন তানজিলাকে। স্ত্রীকে হত্যা করে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে তিনি প্রচার করেন, তানজিলার পরকীয়া প্রেমিক এসে ঘরের মধ্যে তাকে খুন করে গেছে। জামাল মিয়ার কথাবার্তায় সন্দেহ হলে তানজিলার বাবা তারা মিয়া আশুলিয়া থানায় জামাল মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি থানা পুলিশ তদন্ত করে আসামি গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হলে পিবিআই ঢাকা জেলা স্ব-উদ্যোগে মামলাটি গ্রহণ করে। তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই কর্মকর্তা এসআই মানিক চন্দ্র সাহা। তিনি বলেন, আসামি গ্রেফতার এড়াতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়াগায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কিছুদিন পর পর অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। অবশেষে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৯ জুলাই গাইবান্ধা জেলার সদর থানা এলাকা থেকে আড়াই বছর আত্মগোপনে থাকা জামাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পিবিআই এর এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতার জামাল উদ্দিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, সাংসারিক নানা টানাপোড়েন এবং মোবাইলে কথা বলা নিয়ে সন্দেহের জেরে ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন স্ত্রীকে। তিনি ঢাকা জেলা আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
Leave a Reply