আশুলিয়া প্রতিনিধি: আশুলিয়ায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। এসময় অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ৮ মার্চ বুধবার সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খান। এর আগে, ৭ মার্চ মঙ্গলবার আশুলিয়ার ধলপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অপহরণ চক্রের সদস্যরা হলেন- ঝিনাইদহ জেলার মোছা. মায়া খাতুন (৩৭), শিমুল বিশ্বাস (৪৩) ও মো. মোক্তার শেখ (৫০)। তারা তিনজনই আশুলিয়ায় বসবাস করতেন। র্যাব জানায়, গত ৬ মার্চ দুপুর ৩টার দিকে আশুলিয়ার বাসা থেকে জিরাবো বোনের ছেলের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে অপহরণের শিকার হন ভিকটিম মো. আকতার আলী বিশ্বাস। তার কিছু সময় পর ভিকটিমের ছেলে তার বাবার ফোনে না পেয়ে তার ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের বাসায় খোঁজ নিয়েও ভিকটিমের কোন সন্ধান পায় না। পরে সন্ধ্যায় ভিকটিমের ব্যবহৃত ফোন হতে তার ছেলে মো. রুমন হোসেনকে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায় যে, ভিকটিম মো. আকতার আলী বিশ্বাস তাদের নিকট আটক আছে। অপহরণকারীরা ভিকটিমের নগ্ন ছবি তুলে রেখেছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এক লক্ষ টাকা না দিলে তারা ভিকটিমের নগ্ন ও আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে। এমনকি টাকা না পেলে ভিকটিমকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে বিষয়টি অভিযোগ আকারে র্যাব-৪, সিপিসি-২ কে জানালে র্যাবের একটি চৌকস গোয়েন্দা দল অভিযোগের ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে আশুলিয়ার ধলপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করে। এসময় অপহ্নত ভিকটিমকেও উদ্ধার করে র্যাব। র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলে কাজ করে আসছিল। প্রথমে এই চক্রের কয়েকজন মিলে সুনির্দিষ্ট টার্গেট ঠিক করে। টার্গেট ঠিক করে একজন মহিলার মাধ্যমে তার সাথে মিথ্যা সুসম্পর্ক তৈরীর একপর্যায়ে মহিলা ভিকটিমকে তার সাথে দেখা করার জন্য তাদের পূর্ব নির্ধারিত স্থানে ডেকে নেয়। তারপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে ওৎ পেতে থাকা অপরাপর সহযোগীদের কাছে দেয়। এক পর্যায়ে তারা ভিকটিমকে উলঙ্গ করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে। তারপর ভিকটিমের ফোন দিয়ে ভিকটিমের পরিবারকে ফোন দিয়ে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে ও একই সাথে ভিকটিমকে লাঠি দিয়ে প্রহার করে ভিকটিমের পরিবারকে শোনায়। পরবর্তীতে ভিকটিম তার আত্মসম্মানের ভয়ে ও পারিবারিক মর্যাদার কারণে গোপনে মোটা অংকের টাকা দেয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান র্যাবের এই চৌকস কর্মকর্তা।
Leave a Reply