ধামরাই প্রতিনিধি : ধামরাইয়ের আলোচিত আকসির নগর হাউজিং প্রকল্প নিয়ে একাধিক তদন্তের পরও অভিযোগ বাড়ছে। ফসলি জমি নষ্ট করে বালু দিয়ে ভরাট, দখল ও স্থানীয় লোকজনকে নানাভাবে হয়রানির কয়েক’শ অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ এবং প্রশাসন। এনিয়ে একাধিক মামলা ও জিডি হয়েছে থানায়। তবুও থেমে নেই প্রকল্পের কাজ। নদী দখল করে ভরাট ও কৃষকের ক্ষেত নষ্ট করার প্রতিবাদ করায় মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগও রয়েছে। এ অবস্থায় প্রকল্পের ব্যানার ও সাইনবোর্ড অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সাত দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ পেয়ে তারা সময়ের আবেদন করেছে। ১৯ জানুয়ারি ইস্যুকৃত চিঠিতে বলা হয়েছে, ধামরাই ভূমি অফিসের সংরক্ষিত ভলিউম ও রেকর্ডে আকসির নগর হাউজিংয়ের নামে কোনো খতিয়ান নেই। এই প্রকল্পের নামে স্থানীয় কৃষকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও বালু ভরাট করে জোরপূর্বক ফসলি জমির শ্রেণি পরিবর্তনপূর্বক দখল করার অভিযোগ রয়েছে। ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী ২৮ জানুয়ারি শনিবার বলেন, আকসির নগর কর্তৃপক্ষ চিঠির জবাব দিয়েছে। তারা ব্যক্তি নামে রেজিস্ট্রিকৃত জমি হাউজিং কোম্পানীর নামে রেজিস্ট্রেশন করা শুরু করেছে। এজন্য তারা ১৫ দিনের সময় চেয়েছে জানিয়ে ইউএনও বলেন, এই সময়ের মধ্যে যেসব জমি হাউজিং কোম্পানীর নামে রেজিস্ট্রেশন না হবে সেগুলোর সাইনবোর্ড তারা সরিয়ে নিবে। এছাড়া যেসব ব্যক্তির জমি তারা বালু দিয়ে ভরাট করেছে সেই বালুও অপসারণ করবে।
এদিকে আকসির নগর হাউজিং প্রকল্পের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম বলেছেন, তারা ইউএনও’র চিঠির জবাব দিয়ে ব্যক্তি নামে রেজিস্ট্রিকৃত জমি হাউজিং কোম্পানীর নানে রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু করেছেন। অযৌক্তিক সুবিধা না পেয়ে কিছু লোক তাদেরকে নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করছে দাবি করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তদন্ত কমিটি এবং পুলিশের তদন্ত কমিটি আকসির নগর প্রকল্পে কোনো অনিয়ম পায়নি। যা তারা তাদের পৃথক প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন।অন্যদিকে স্থানীয়দের দাবি, কুল্লা ইউনিয়নের মাখুলিয়া গ্রামে বিভিন্ন ফসলি জমি জোরপূর্বক দখল করে কয়েক বছর ধরে আকসির নগর নামের একটি হাউজিং প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে এই প্রকল্প গড়ে উঠায় স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে ওই এলাকার শত শত গ্রামবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছেন। এই প্রকল্প নিয়ে থানায় একাধিক মামলা ও অর্ধশতাধিক জিডি হয়েছে। তবুও প্রকল্পের কাজ চলছে। ফসলি জমি নষ্ট করে বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। বিতর্কিত এই প্রকল্পের মূল ব্যক্তি তৌহিদুল ইসলাম সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনী মহল্লার বাসিন্দা। তিনি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। কাইজেন গ্রুপ নামে তার আরেকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
Leave a Reply