আশুলিয়া প্রতিনিধি : ঘরের সামনে তখনো জ্বলছিল চুলা। ভাত পুড়ে যেতে দেখে ভাড়াটিয়া মীমকে ডাকতে যায় বাড়িওয়ালা। বাইরে থেকে বন্ধ করা ঘরের দরজা খুলে ঘরের ভেতরে ঢুকতেই দেখেন গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় গৃহবধূ মীমের নিথর দেহ পড়ে আছে বিছানায়। খবর পেয়ে নিহত গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার উত্তর জামগড়ার এলাকায় সাইফুল ইসলামের মালিকানাধীনে বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় পুলিশ। নিহত মীম আক্তার (১৯) সিরাজগঞ্জ সদর থানার রাণী গ্রামের আ. মজিদের মেয়ে। ৯ মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়েছিল বলে জানায় নিহতের স্বজন। অভিযুক্ত স্বামী মিলনের গ্রামের বাড়ি একই এলাকার ভাতপিয়ারী গ্রামে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী বাড়িওয়ালার স্ত্রী লিজা বেগম বলেন, মীমের স্বামী মিলন আজকে অফিসে যায়নি। সারাদিন ঘর থেকে কোনো শব্দও শোনা যায়নি। আমি দেখি ঘরের সামনে চুলায় থাকা ভাত পুড়ে যাচ্ছে। পরে মীমকে ডাকি, কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা টোকা দিতে গিয়ে দেখি দরজা বাইরে থেকে লাগানো। পরে দরজা খুলে দেখি কেউ শুয়ে আছে। ভাবলাম মীম হয়তো ঘুমিয়ে গেছে। ডাকাডাকির পর না উঠলে কম্বল সড়াতেই দেখি মীমের গলায় ওড়না পেঁচানো। ওর মুখ নীল হয়ে গেছে। পরে পুলিশসহ আশপাশের সবাইকে খবর দেই। প্রতিবেশী ও নিহতের চাচি তাসলিমা খাতুন বলেন, মিলন কাজ করতে চাইত না। মীম কাজের কথা বললেই মারধর করত তাকে। আজ রাতের জন্য ভাত চুলায় বসিয়ে দুজন ঘরে যায়। আর বের হয় না। পড়ে ঘরে গিয়ে মীমের লাশ পাওয়া যায়। মীমের গলায় আঙুলের দাগ আছে। নিহতের মীমের বাবা আব্দুল মজিদ বলেন, আমি আমার মেয়ের খুনি মিলনের ফাঁসি চাই। আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহমেদ শেখ বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কিছুদিন আগে মীমের বাবার কাছে যৌতুক চেয়েছিল মিলন। সেই জের ধরেই পারিবারিক কলহ চলে আসছিল বলে জানিয়েছে মীমের বাবা। এ কারণেই হয়তো মীমকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে মিলন। বাকিটা তদন্তে জানা যাবে। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবার মামলা দায়ের করেছেন। পলাতক স্বামীকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
Leave a Reply