সংবাদ রিপোর্ট: আশুলিয়ায় মহাসড়কে চলাচলরত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ তুলে অবিলম্বে এসব চাঁদাবাজির অভিযোগ বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন অটোরিকশা চালকরা। ২৭ জুন সোমবার দুপুরে কয়েকশ অটোরিকশা চালক একত্রিত হয়ে সাভারের নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পল্লি বিদ্যুৎ এলাকায় অবস্থান নিয়ে প্রথমে বিক্ষোভ করে। পরে সড়কে ইলেকট্রিক পোল ফেলে সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে বিক্ষোদ্ধ চালকরা পুরাতন টায়ার ও গাছের ডাল ফেলে মহাসড়কের মাঝে আগুন জ¦ালিয়ে দেয়। এসময় মহাসড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে শান্ত করতে গেলে আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ করে অতর্কিতভাবে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করে। এঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ আহত হয়। পরে বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে থানা পুলিশ পিছু হটে এবং ঘটনাস্থল থেকে সড়ে যায়।আন্দোলনকারী রিকসা চালকরা জানান, মহাসড়কে অটোরিকশা পেলেই হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা তাদের আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে বড় অটোরিকশা থেকে ৫ হাজার ২শ টাকা ও ছোট অটোরিকশা থেকে ২৬০০ টাকা জরিমানা আদায় করে। তাদের অভিযোগ পুলিশ জরিমানার কথা বলে এই টাকা আদায় করলেও তা রিকসা চালকদের পরিশোধ করতে হয় হাইওয়ে থানার পাশে এক চায়ের দোকানে। তাই বিষয়টি পুলিশের চাঁদাবাজি উল্লেখ করে তা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানান তারা। রিকসা চালক সবুজ মিয়া বলেন, অনেক সময় পুলিশ মহাসড়কে না উঠলেও ভিতরের শাখা রাস্তা থেকে জোরপূর্বক আমাদের গাড়ি আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন অংকের টাকা আদায় করে গাড়ি ছেড়ে দেয়। আগে পুলিশের লোক টাকা নিলেও নতুন নিয়ম করেছে হাইওয়ে থানার পাশে এক চায়ের দোকানে সেই টাকা দিতে হয়’। তিনি আরও বলেন, “আমরা গরীব মানুষ, রিকসা চালিয়ে সংসার চালাই। আমরাতো চুরি-ডাকাতি করি না। তাহলে কেন আমাদের এভাবে হয়রানি করা হয়। আমরাই কেবল জানি এই জরিমানার টাকা তুলতে আমাদের পরে কি পরিমাণ কষ্ট হয়, বউ-বাচ্চার জন্য বাজার না করে এই টাকা আমাদের পরিশোধ করতে হয়। আন্দোলনকারী রিকসা চালকরা অভিযোগ করেন, আমিনবাজার থেকে চন্দ্রা এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কালামপুর পর্যন্ত দুটি মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশও আমাদের রিকসা আটক করে থাকে। পরে কিছু রিকসা থেকে রেকার বিলের নাম করে চাঁদা আদায় করা এবং কিছু রিকসা কমিউনিটি পুলিশ ও তাদের সোর্সরা টাকা নিয়ে রিকসাগুলো ছেড়ে দেয়। রিকসা চালকদের আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে, সাভার হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, “রিকসা চালকদের একটি গ্রুপ সংগঠিত হয়ে আন্দোলন করছে, তবে তারা যেই দাবিগুলো করছে তা ভিত্তিহীন। মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ায় আমরা মহাসড়কে অটোরিকশা পেলে তা আটক করি, এবং ২৫০০ টাকা জরিমানা করা হয় যা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। এখানে চাদাবাজির কোন ঘটনা নেই। উপরন্তু একটি চক্র রিকসা-ভ্যান সমিতিসহ বিভিন্ন নামে কমিটি করে রিকসা ছাড়ানোর জন্য তদবির করে থাকে। তাদের কথা না শুনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করায় পরিকল্পিতভাবে দালাল শ্রেনীর লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করছে।
Leave a Reply