সংবাদ রিপোর্ট: সাভারে কিস্তির টাকা তুলতে গিয়ে গ্রাহকের মারধরে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক মাঠকর্মী নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। ১৫ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুলাহিল কাফী। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে।আব্দুলাহিল কাফী জানান, বুধবার বিকালে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের রাজফুলবাড়ীয়া এলাকার একটি দোতলা বাড়ির নিচতলায় সিঁড়ির সামনে থেকে ব্র্যাককর্মী রেজাউলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সন্ধ্যায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। নিহত রেজাউল করিম পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার চৌগাছিয়া এলাকার প্রয়াত সেকেন্দার আলী ছেলে। তিনি ব্র্যাকের সাভার রাজফুলবাড়িয়া শাখার মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনায় আটক শাহিন আলী (২২) রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। তিনি হেমায়েতপুরের পানপাড়া এলাকার একটি ডাইং কারখানার শ্রমিক। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পুলিশ তদন্তে গিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া শাহিন আলীকে সন্দেহ করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় গলা ও পিঠে নখের আঁচড়ের দাগ দেখতে পায় পুলিশ। হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রেজাউলকে হত্যা কথা স্বীকার করেন শাহিন। শাহিনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গত মঙ্গলবার ঋণের কিস্তির টাকা আনতে তার (শাহিন) কাছে যান রেজাউল। সেসময় শাহিন টাকা নেই জানিয়ে রেজাউলকে পরে আসতে বলেন। বুধবার সকালে কিস্তির টাকার জন্য আবার শাহিনের বাসায় যান রেজাউল। এ সময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। তখনই ব্র্যাককর্মীর নখের আঁচড়ে শাহিনের গলা ও পিঠে দাগ হয়। শাহিন এক পর্যায়ে তলপেটে লাথি মারলে অণ্ডকোষে আঘাত লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যান রেজাউল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শাহিন আরও জানান, ওইদিন দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তিনি মরদেহটি নিজের কক্ষেই লুকিয়ে রাখেন। পরে সুযোগ বুঝে সিঁড়ির নিচে নিয়ে রাখেন। বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়ারা লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। হত্যার পর রেজাউলের পকেটে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নিজ কক্ষের শৌচাগারের চিলেকোঠায় লুকিয়ে রাখেন শাহীন। তার স্বীকারোক্তিতে পুলিশ সেই টাকাও উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে কাউসার আহমেদ বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।
Leave a Reply