
সংবাদ রিপোর্ট: সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এক হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। পুলিশের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম জশিতা ইসলাম ২৭ জানুয়ারি সোমবার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মহানগর দায়রা জজ আদালতে সরকারি কৌঁসুলি ওমর ফারুক ফারুকী জানান, এনামুর রহমানকে এদিন আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার এসআই মনিরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন ওমর ফারুক ফারুকী। অন্যদিনে রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রাণ নাথ। পরে বিচারক আদেশ দেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে এনামুর রহমান শুনানিতে বলেন, “আন্দোলনে আহতদের আমার হাসপাতালে (সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) বিনা টাকায় চিকিৎসা দিয়েছি। ২৯০ জন গুলিবিদ্ধকে চিকিৎসা দিয়েছি। ৫৭৬ জনকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। “আমি হাসপাতাল আর বাসা ছাড়া আর কোথাও যাই না। এই মিরপুরের ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আমি কোনো মিটিং মিছিলে ছিলাম না। কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না।” ২৬ জানুয়ারি রবিবার রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে এনামকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই মিরপুর গোলচত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন হকার মো. সাগর। ওইদিন বিকেল ৪টায় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর নিহতের মা বিউটি আক্তার বাদী মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৪২ জনকে আসামি করা হয়। আসামির তালিকায় ৩০ নম্বরে রয়েছে এনামুর রহমানের নাম। পেশায় চিকিৎসক এনাম সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৯ সালে তিনি শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় থাকলেও ২০২৪ সালে বাদ পড়েন। ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধসের পর আহতদের একটি বড় অংশের চিকিৎসা হয়েছিল এনাম মেডিকেলে। তাতে এনামের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে তাকে নৌকা প্রতীক দেন আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের সেই নির্বাচনে জনপ্রিয়তার পরীক্ষা দিতে হয়নি এনামুরকে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে সংসদে যান তিনি। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও একই আসন থেকে তিনি এমপি হন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নতুন মন্ত্রিসভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এনাম। ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। কিন্তু তাকে হারিয়ে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম, যিনি আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
Leave a Reply