সংবাদ রিপোর্ট : ভেজাল পোলাওয়ের চালে ছেয়ে গেছে সাভার বাজার। ভেজাল চালের ভিড়ে আসল পোলাওয়ের চাল নির্ণয় করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ী রাতে অন্ধকারে নিজস্ব গুদামে পোলাওয়ের চালের সঙ্গে কাটারি ভোগ চাল ও সুগন্ধি পাউডার মিশিয়ে তৈরি করছে ভেজাল পোলাওয়ের চাল। এতে ৪০০ বস্তার এক ট্রাক চালে অতিরিক্ত লাভ হচ্ছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। যার মধ্যে প্রতি বস্তায় বাড়তি লাভ হচ্ছে ২৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। ভোক্তা অধিকার ও গোয়েন্দারা এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছে বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাভার নামা বাজারে ভেজাল পোলাওয়ের চালের রমরমা ব্যবসা চলছে অনেকদিন ধরে। ১০০ বস্তা চিনি গুড়া পোলাও এর চালের সঙ্গে কাটারি ভোগ চাল মেশানো হয় ২০ বস্তা। কখনো মেলানো হয় আতপ চাল। তারপর আনুপাতিক হারে মেশানো হয় ইন্ডিয়ান সুগন্ধি পাউডার। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের কোনভাবে ধরার উপায় থাকে না আসল আর নকলের ভেদাভেদ। এভাবে পোলাওয়ের চাল কিনে নিয়মিত প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর এতে ব্যবসায়ীর অতিরিক্ত লাভ হয় হাজার হাজার টাকা। শেরপুর এলাকার পোলাওয়ের চালকে বলা হয় তুলসী মালা আর দিনাজপুরের চালকে বলা হয় চিনি গুড়া বা কালোজিরা। ৫০ কেজির পোলাওয়ের চালের দাম সাড়ে চার হাজার টাকা আর কাটারি ভোগ চাল এক বস্তার দাম ২৮০০ থেকে ৩২০০ টাকা। দুইয়ের সংমিশ্রণ ও পাউডার মিলিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল পোলাওয়ের চাল। এসব চাল হাতে নিয়ে ঘষা দিলেই হাতের তালুতে পাউডার মিশে সুগন্ধি ঘ্রাণ পাওয়া যায়। সারা বছর একই কায়দায় রাতের অন্ধকারে গুদামের ভিতরে ভেজাল পোলাওয়ের চাল তৈরি করা হয় । ঈদ এবং বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে এর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা এমন তৎপরতা বাড়িয়ে দেয়। বিয়ে-শাদীর মৌসুমেও এই চালের চাহিদা ব্যাপক থাকার সুযোগ নেয় অসাধুচক্র। এক ট্রাকে আসা ৪০০ বস্তা পোলাওয়ের চালে বাড়তি কাটারি ভোগ চাল মেশানো হয় ৮০ বস্তা। এতে প্রতি বস্তায় বাড়তি ২৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা লাভ হয়। একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সাভার বাজারে একতা এন্টারপ্রাইজ, সারদা এন্টারপ্রাইজ, গকুল স্টোর, হেমন্ত বনিক স্টোর, বণিক স্টোর, শংকর স্টোর, হানিফ রাইস, লোকনাথ রাইসসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী বহু বছর ধরে পোলাওয়ের চালের ব্যবসা করে আসছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে আছে এমন অনিয়মের অভিযোগ।
Leave a Reply