সংবাদ ডেস্ক: বর্ণাঢ্য কর্মজীবন শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার অবসরে গেলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। নতুন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর বিকেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে আনুষ্ঠানিকভাবে বেনজীর আহমেদকে বিদায়ী সংবর্ধনা জানানো হয়। একটি সুসজ্জিত পুলিশ দল বিদায়ী আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদকে আনুষ্ঠানিকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এরপর তিনি তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীদের কাছ থেকে বিদায় নেন। পরে তিনি সুসজ্জিত একটি গাড়িতে ওঠেন। এসময় পুলিশের ঐতিহ্য ও রীতি অনুযায়ী তাকে বিদায় জানানো হয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সবপর্যায়ের পুলিশ অফিসার ও সদস্য এবং সিভিল স্টাফরা দু’পাশে রশি টেনে গাড়িটি হেডকোয়ার্টার্সের আউট গেট পর্যন্ত নিয়ে যান। সেখান থেকে আইজিপির অশ্বারোহী সজ্জিত মোটর শোভাযাত্রাটি রাজধানীর মিন্টো রোডে অবস্থিত ডিএমপির পুলিশ ভবনে পৌঁছে দেওয়া হয়। পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্ণিল কর্মজীবনের অধিকারী ড. বেনজীর আহমেদ ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করে বিভিন্ন পর্যায়ে দীর্ঘ ৩৪ বছর ৭ মাস দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তার ২৮ মাসের কর্মকালে বাংলাদেশ পুলিশকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাশিত ‘জনগণের পুলিশ’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘ভিশন-২০৪১’ সালের উন্নত দেশের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন। তিনি আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় পুরো দেশ করোনা মহামারির ভয়াল থাবায় অচল হয়ে পড়ে। তিনি করোনা প্রতিরোধে সম্মুখযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের মানসম্মত চিকিৎসার জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর ও একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করেন। তার নেতৃত্বে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশ তাদের মানবিক সহায়তা দেয়।
তিনি আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, অপেশাদার আচরণ বন্ধ করা, বিট পুলিশিং এবং পুলিশ সদস্যদের কল্যাণ এ পাঁচ নীতি ঘোষণা করেন। পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করেন। এছাড়া ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) পুলিশের বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজন, পুলিশ কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন, পুলিশ কনস্টেবল থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পর্যন্ত বছরে কমপক্ষে একবার বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল, গাইডলাইন ও এসওপি তৈরি, নারীদের জন্য নিরাপদ সাইবার স্পেস ‘সাইবার সাপোর্ট পর উইমেন ফেসবুক পেজ’, পুলিশের নিজস্ব নিউজপোর্টাল ‘পুলিশ নিউজ’ ইত্যাদি চালু করেন। পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে তিনি সব বিভাগে আন্তর্জাতিক মানের স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ বিভাগীয় পর্যায়ের হাসপাতালের আধুনিকায়ন করেন। তার হাত ধরে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে বেশকিছু নতুন প্রতিষ্ঠান চালু হয়।
Leave a Reply