ধামরাই প্রতিনিধি: ধামরাইয়ের ৭টি অবৈধ ইটভাটায় হাই কোর্টের নির্দেশে ঢাকা জেলা প্রশাসন এবং ধামরাই উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে চিমনি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আবারো এসব অবৈধ ইটভাটা ভাঙার পরপরই আবার নতুন করে চিমনি গড়ে তুলে ইটভাটা চালুও করা হয়েছে। কিন্তু কার নির্দেশনায় বা অনুমতি নিয়ে এসব অবৈধ ভাটা প্রশাসন ভেঙে দেয়ার পরও আবার নতুন করে গড়ে তুলছেন সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি ভাটা মালিকরা। সরেজমিনে দেখা যায়, নান্নার এলাকার ভাঙা একতা ব্রিকস আবার নতুন করে চিমনি তৈরি করা হচ্ছে এবং এর নাম একতা ব্রিকস থেকে পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে মেসার্স লামিয়া ব্রিকস-৫ এবং মেসার্স এমকেবি ব্রিকস (কালামপুর ব্রিকস) এর চিমনি বানিয়ে ভাটা চালু করে ইট পুরানো হচ্ছে। এছাড়াও ডাউটিয়া এলাকার ডাউটিয়া ব্রিকস, হালিমা ব্রিকস, সান ব্রিকস নামের তিনটি ইটভাটাই নতুন চিমনি তৈরি করছ। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের তদারকির অভাবে এসব ভাটা গুলো ভাঙার পরও আবার নতুন করে চিমনি তৈরি করে ভাটা চালু করছে। প্রশাসনের সঠিক তদারকি থাকলে নতুন করে চিমনি তৈরির কথা তো দূরে থাক চিন্তাও করতে পারতেন না এসব অবৈধ ইটভাটার মালিকরা। জানা যায়, হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা জেলা প্রশাসন এবং ধামরাই উপজেলা প্রশাসন প্রায় ৭১টি অবৈধ ইটভাটার লিষ্ট করেছেন। যে ভাটার ৩/৪ বছর ধরে পরিবেশের ছাড়পত্র ও ডি. সি. লাইসেন্স নেই এবং ভবিষ্যতে এসব কাগজপত্র নতুন করে পাওয়ারও কোন সম্ভাবনা নেই এমন সব অবৈধ ইটভাটা গুলো ভেঙে দিবে বলে জানিয়েছেন ধামরাই উপজেলা প্রশাসন। সেই লিষ্ট অনুযায়ী চলতি মাসের ১ অক্টোবর ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ মঈনুল হক ও ধামরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তারের যৌথ নেতৃত্বে এসব অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা শুরু করা হয়। ওই দিন ধামরাইয়ের যুবলীগ নেতা মোঃ আবদুল লতিফের মালিকানাধীন নান্নার ইউনিয়নে অবস্থিত একতা ব্রিকস (বর্তমান নাম মেসার্স লামিয়া ব্রিকস-৫) এবং মেসার্স এমকেবি ব্রিকস নামের দুটি অবৈধ ইট ভাটার চিমনি মাটি কাটার এক্সেভেটর (ভেকু) দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়। এর পর দিন ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকীর নেতৃত্বে সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়া এলাকার ডাউটিয়া ব্রিকস, হালিমা ব্রিকস, সান ব্রিকস নামের তিনটি অবৈধ ইটভাটার চিমনি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও কুশুরা ইউনিয়নের মধুডাঙ্গা এলাকায় মেসার্স নূর ব্রিকস ও সানোড়া ইউনিয়নের বাটুলিয়া এলাকায় মেসার্স লুৎফর ব্রিকস এর চিমনি ভেঙে দেয়া হয়। প্রশাসন এসব অবৈধ ইটভাটা ভেঙে দিলেও ভাটার মালিকরা আবার চিমনি তৈরি করে ভাটা চালু করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সচেতন নাগরিকরা বলছেন, প্রশাসন একবার এসে ভাটা ভেঙে দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু পরবর্তীতে আর কোন তদারকি করছেন না, ফলে এসব অবৈধ ইটভাটা গুলো রাতের আধারে আবার চিমনি তৈরি করে ভাটা চালাচ্ছে। ইট ব্যবসায়ী মোঃ আবদুল আহাদ বলেন, প্রশাসন এসে ভাটার চিমনি ভেঙে দিয়ে গেলেন। এর পরেই আবার সেই ভাটার মালিক নতুন চিমনি তৈরি করে ভাটা চালাচ্ছেন। এতে লাভ হলো কার? ভেঙে না দিয়ে জরিমানা করলেও তো সরকারের কোষাগারে টাকা জমা হতো। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো যে ইটভাটা গুলো অবৈধ সে গুলা একেবারেই বন্ধ করে দেয়া হোক। ভাঙার পরও প্রশাসনের তদারকি করা প্রয়োজন। তা হলে ভাঙার পর নতুন করে তৈরি করতে সাহস পাবে না। আপনার ইটভাটার অনুমোদন না থাকায় প্রশাসন ভেঙে দিয়েছিলো, আবার নতুন করে তৈরি করছেন অনুমোদন পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে যুবলীগ নেতা ও একতা ব্রিকস (বর্তমান নাম মেসার্স লামিয়া ব্রিকস-৫) এর মালিক মোঃ আবদুল লতিফ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। ডাউটিয়া এলাকার হালিমা ব্রিকস এর মালিক আমির হামজা বলেন, সবই তো ভাঙছে। তার পরও আবার সবাই চালাইতেছে। নতুন করে আপনার ভাটার অনুমোদন পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ পাইছি। আপনি একসময়ে আইসেন কথা বলুমনি আপনার সাথে।এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, এবিষয়ে আমরা তথ্য পেয়েছি। আমরা আবারো অভিযান শুরু করবো।
Leave a Reply