1. kamruzzaman78@yahoo.com : kamruzzaman Khan : kamruzzaman Khan
  2. ssexpressit@gmail.com : savarsangbad :
মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
সাভারে নিখোঁজের ৫ দিন পর ভ্যানচালকের গলিত মরদেহ উদ্ধার, ২ বন্ধু আটক সাভারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে নিহত শুভর পরিবারের খোঁজ রাখে না কেউ সাভারে একসঙ্গে চার কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন ফারজানা সাভারে নিষিদ্ধ পলিথিন বিরোধী সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ সাভারে ব্যবসায়ী আসাদউজ্জামান হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার ৩ ধামরাইয়ে ৩ ডাকাত আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার সাভারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন সাভারে বিএনপি’র নেতা কর্মীদের ভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান ধামরাইয়ে শহীদ ফয়সাল উদ্দিন হাশমি’র স্মরণে সভা সাভার পৌর এলাকায় বিনোদনপ্রেমীদের জন্য ‘আশিক মিনি শিশু পার্কের’ উদ্বোধন

আশুলিয়ার মোশারফ অল্প খরচে ফগার মেশিন, তাক লাগিয়ে দিয়েছেন

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩

আশুলিয়া প্রতিনিধি: সম্প্রতি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। সারাদেশের মানুষ ডেঙ্গু আতঙ্কে রয়েছে। এরই মধ্যে মশা নিধনে স্বল্প খরচে আধুনিক ফগার মেশিন উদ্ভাবন করে সাড়া ফেলেছেন সাভারের আশুলিয়ায় মোশাররফ হোসেন। তার ফগার মেশিন এখন ধোঁয়া ছড়াচ্ছে সারাদেশে। গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজ ল্যাবে বায়োকেমিস্ট, মাইক্রো বাইয়োলজি ও ফার্মেসি বিভাগের প্রধান গবেষকরা পরীক্ষা করে মেশিনটির ব্যবহারে স্বীকৃতি দিয়েছে। মোশাররফ হোসেনের চ্যালেঞ্জ তার মেশিনের মাধ্যমে সারা দেশকে মশা মুক্তর রাখবেন তিনি। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি ফগার মেশিন তৈরি করতে পারেন তিনি। তবে তার তৈরি মেশিনের গ্রাহক চাহিদা প্রচুর। ২৩ জুলাই রবিবার আশুলিয়ার খেজুরটেক এলাকায় মোশাররফ হোসেনের বাড়ির সামনে টিনের ঘরে তৈরি করা ফগার মেশিনের কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে তার কর্মযজ্ঞ। ডেঙ্গু মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় মেশিনের চাহিদা বেড়েছে। তাই দম ফেলার ফুরসত নেই মেশিন তৈরিতে নিয়োজিত শ্রমিক ও মোশারফের। রাত-দিন মেশিন তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। জানা গেছে, প্রতিদিন ১২ জন শ্রমিক কাজ করে মোশাররফের এই মেশিন তৈরিতে। মেশিনে ব্যবহৃত গ্যাসের বোতল ও লিকুইড পদার্থ ছাড়া অন্য সব যন্ত্রাংশ নিজেই তৈরি করেন তিনি। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি বানানো হয় এই মেশিন, যা মাসে প্রায় ৩০০টির মতো। বর্তমানে এই মেশিনের দাম রাখা হচ্ছে ছয় হাজার ৫০০ টাকা। প্রতিবারে দুই লিটার এরোসল ও একটি গ্যাসের বোতল দরকার হয় এই মিনি ফগারে।এ টি একবারে এক লাখ বর্গফুট এলাকায় ধোঁয়া দিতে সক্ষম।

ফগার মেশিনটির উদ্ভাবক মোশারফ হোসেন বলেন, আল্লাহ তালার কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া আদায় করি। তিনি আমাকে এই মেশিনটি তৈরি জন্য জ্ঞান দিয়েছেন। করোনা মহামারির সময় আমি আমার এলাকার জন্য মশার নিধনের মেশিন কিনতে গিয়েছিলাম। কিনতে গিয়ে দেখি ওই ফগার মেশিনের অনেক দাম, যা আমার কেনার সাধ্য নেই। পরে অনেক দিন চিন্তা করে সেই মেশিনটি কিভাবে কাজ করে সেটিকে আমি অনুসরণ করি। ফগার মেশিন তৈরির জন্য নিজে নিজে প্রাথমিক অবস্থায় তৈরির চেষ্টা করি। তারপর ধীরে ধীরে বিভিন্নভাবে কাজ করে আমি আজ পরিপূর্ণ ফগার মেশিন তৈরি করতে পারছি।তিনি বলেন, ফগার মেশিন উদ্ভাবনের পর আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশে এই মেশিনটি খুব প্রয়োজন। আমাদের দেশে মশা অনেক। যেখানে ঢাকার সিটিতে এখন প্রতিদিন ডেঙ্গুতে মানুষ মারা যাচ্ছে। তাই আমি মানুষের সেবা করতে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে এই ফগার মেশিন বানিয়েছি। আমার এই ফগার মেশিনের ব্যাপক চাহিদা পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করেছি, সরকার যদি আমাকে সহায়তা করে, আমি দেশকে মশা মুক্ত করব ইনশাল্লাহ। এই পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মেশিন আমি বাজারে ছেড়েছি। আমার বিশ্বাস এই মেশিন ব্যবহার করে বাংলাদেশকে মশা মুক্ত করা সম্ভব। আমার এই মিনি ফগার এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। তার তৈরি মেশিন সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০১৯ থেকে শুরু করেছি। করোনার সময় মেশিন নিয়ে গবেষণার সময় পেয়েছি৷ অনেকের উৎসাহ পেয়েছি, আবার অনেকের কুটু কথাও বলেছে। তবে আমি সফল হয়েছি। ১৩ ধাপে মেশিনটি আপডেট করা হয়েছে৷ এখন আরও আধুনিক হয়েছে। আমরা কেমিক্যাল দিচ্ছি। সেটি গণবিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব থেকে চারজন গবেষক দীর্ঘ দিন পরীক্ষা করে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। আমার এই মেশিন ও কেমিক্যাল শতভাগ মানব দেহের জন্য নিরাপদ। এক লাখ টাকার মেশিনে যে পরিমাণ ধোঁয়া পাওয়া যায়, আমার মেশিনে তার চেয়ে বেশি ধোঁয়া পাওয়া যায়। অল্প খরচে আমরা মেশিনটি বিক্রি করছি। দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানায় আমার মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। আমার মেশিনের গ্রাহক এখন সারা দেশজুড়ে। মোশারফ হোসেন এখন উদ্ভাবক থেকে উদ্যোগক্তা। তার কারখানায় ১২ জন শ্রমিক কাজ করে। তার মধ্যে লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ করেন মো. লতিফ হোসাইন লিখন। তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই এই কারখানায় কাজ করি। দিনে সবাই মিলে ১৫ থেকে ১৬টি মেশিন তৈরি করতে পারি। আমার পড়ালেখা ও বাড়ির খরচও এখান থেকে চালাই। আমার মত সাবাই এখানে কাজ করে পরিবার চালায়। আমাদের মেশিনে কোনো শব্দ হয় না। ধোঁয়াও অন্যান্য মেশিনের চেয়ে অনেক বেশি। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. ফুয়াদ হোসেন বলেন, এই মেশিনটিতে যে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটি আন্তর্জাতিকভাবে সর্বজন স্বীকৃত। এই কেমিক্যালে মশা কার্যকরভাবেই মারা যায়, সেটি আমরা দেখেছি। আমরা আশা করবো দেশি প্রযুক্তিকে সরকার সব সময় যেন উৎসাহ দেয়। এই প্রযুক্তিটির অনেক সুবিধা রয়েছে। শব্দবিহীন ও মশা নিধনে কার্যকর একটি মেশিন। এ বিষয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা বলেন, বিডি ফগার মেশিন যেটা মোশারফ হোসেন আবিষ্কার করেছেন। তিনি আমাদের সেচ্ছাসেবক। সাধারণভাবে একটি ফগার মেশিন যদি কিনতে হয় তাহলে এক থেকে দেড় লাখ টাকার প্রয়োজন হয়। তার আবিষ্কৃত এই মেশিনটি মাত্র পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। এই মেশিনটি খুবই ভালো। আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও নিয়েছি। এই মেশিনটি মানুষের শরীরের জন্য বিপদজনক নয়। সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমি মেশিনটি দেখেছি। বড় মেশিন যেটা আছে তার চেয়ে এই ফগার মেশিনে ধোঁয়ার পরিমাণ বেশি এবং শব্দবিহীন। পরিবেশবান্ধব মনে হয়েছে। মেশিনটির পৃষ্ঠপোষকতার জন্য আমরা স্থানীয়ভাবে তাকে পরামর্শ দিচ্ছি। যেহেতু এটি তার একটি নিজস্ব উদ্ভাবন সেহেতু সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে একটি নিবন্ধন করে নিতে পারেন। ইতোমধ্যে এই মেশিনটি তৈরিতে তিনি যেন প্যাটেন্ট পান, সে জন্য আমরা উপজেলার পক্ষ থেকে সহযোগিতা করেছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ :