সংবাদ ডেস্ক: আজ ২২ এপ্রিল শনিবার সারা দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসা। ঈদের নামাজ শেষে চলবে শুভেচ্ছা বিনিময়।পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক শুভেচ্ছা বার্তায় রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই যেন ঈদের আনন্দ সমানভাবে উপভোগ করতে পারে সেজন্য দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ঈদুল ফিতর মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ঈদ আমাদের একটি সর্বজনীন উৎসব। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে সবার মাঝে, গ্রাম-গঞ্জে, সারা বাংলায়, সারা বিশ্বে। সব ভেদাভেদ ভুলে এদিন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এক কাতারে শামিল হন এবং ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নেন। ঈদ সবার মধ্যে গড়ে তোলে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি আর ঐক্যের বন্ধন। ঈদুল ফিতরের শিক্ষা সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ-এ প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, মানবতার মুক্তির দিশারি হিসেবে ইসলামের মর্মার্থ ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক, বিশ্ব ভরে উঠুক শান্তি আর সৌহার্দ্যে- পবিত্র ঈদুল ফিতরে এ আমার প্রত্যাশা।
রেওয়াজ অনুযায়ী এ বছরও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি। ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর এবার শেষবারের মতো বঙ্গভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। শনিবার সকাল ১০টায় বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর সাড়ে ১০টা থেকে অন্যান্য অতিথির সঙ্গে দেখা হবে।
এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শুভেচ্ছা বাণীতে সকল প্রকার অন্যায়, অনাচার, হানাহানি ও কুসংস্কার পরিহার করে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনের সকল স্তরে শান্তির ধর্ম ইসলামের চেতনা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ব বোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানি ভুলে মানুষ সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের জীবনে আনন্দের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। ঈদের আনন্দ আমাদের সবার। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মুসলমানদের আত্মশুদ্ধি, সংযম, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন পরিব্যাপ্তি লাভ করুক-এটাই হোক ঈদ উৎসবের ঐকান্তিক কামনা।
ঈদের দিন সকাল ১০টায় গণভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত তিন বছর ঈদের দিন প্রধানমন্ত্রীর কোনও আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি ছিল না। এ বছর আগের মতোই ঈদের দিন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, তিন বাহিনী প্রধান, কূটনীতিক, জ্যেষ্ঠ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।
জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়োজনে এবার রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতীয় ঈদগাহে এবার ঈদের নামাজ পড়বেন। এ ঈদগাহে এবার প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি জামাতে অংশ নেবেন। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, কূটনীতিকসহ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং ঢাকাবাসী অংশ নেবেন। নারীদের নামাজের জন্য এখানে যেমন আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে, তেমনি বের হওয়ার জন্যও আলাদা গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে এবার দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৭টায় প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে, সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। এছাড়াও ঢাকায় প্রায় ১ হাজার ৪৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ঈদগাহ ও মসজিদ মিলিয়ে কোনও কোনও জায়গায় একাধিকবার ঈদের জামাত হবে।
এছাড়া ঈদ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, প্রবীণ নিবাস, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, সেইফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র, দুস্থ কল্যাণ ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশন যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে। এ উপলক্ষে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply