1. kamruzzaman78@yahoo.com : kamruzzaman Khan : kamruzzaman Khan
  2. ssexpressit@gmail.com : savarsangbad :
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ অপরাহ্ন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অতিথি পাখি মুখরিত

  • আপডেট সময় : বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২২

সংবাদ ডেস্ক: শীত এলেই ওরা চলে আসে। আসে একেবারে দলবেঁধে। সকালের স্নিগ্ধ কুয়াশায় আর মৃদু রোদের ফাঁক দিয়ে যেন ভেসে আসে কিচিরমিচির শব্দ। লাল শাপলার লেকগুলো মুখরিত হয়ে থাকে পাখির জলকেলি এবং কলকাকলিতে। এভাবেই শীতের বার্তা নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন ঘটে পরিযায়ী পাখির। প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে পরিযায়ী পাখিরা আসতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে। তাদের আগমনে প্রকৃতি যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়। সংস্কৃতি ও প্রকৃতির নগরীর লাল শাপলা শোভিত লেকগুলোয় জলকেলি ও কলকাকলিতে মুখরিত করে জানান দিচ্ছে তাদের উপস্থিতি। ক্যাম্পাসের গাছপালায় ঢাকা সবুজ প্রকৃতি আর পাখির খাদ্য ও বসবাস উপযোগী জলাশয়গুলোও যেন বরণ করে নেয় পরিযায়ী পাখিদের। তাই শীতকালে তারা এই জলাশয়গুলোকেই নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিচ্ছে। হিমালয়ের উত্তরের সুদূর সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপালে এ সময়টায় প্রচুর তুষারপাত হয়। ওই তুষারপাতে পাখিরা মানিয়ে নিতে না পেরে বাংলাদেশের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে। আর দূর-দূরান্ত থেকে আসা এসব পাখিকে স্বাগত জানায় জাবি ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে। শীতের সময় ক্যাম্পাসে ১২৬ প্রজাতির দেশীয়, ৯৮ প্রজাতির বিদেশি মিলিয়ে ২০৬ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। এর মধ্যে ৭৮ প্রজাতির পাখি নিয়মিত ক্যাম্পাসে অবস্থান করে। শীত বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্যাম্পাসে বাড়তে থাকে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। পাখিদের বিচরণ দেখতে প্রায় প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী ক্যাম্পাসে ভিড় জমায়।ডিসেম্বরের শুরু থেকে জানুয়ারির অর্ধেক পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পাখির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এবার ট্রান্সপোর্টের পাশের কিংবা রেজিস্ট্রার ভবনের পেছনের লেকে তাদের আধিক্য চোখে পড়ে। এছাড়াও ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার, মনপুরা, বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরের লেকগুলোতেও তাদের আধিক্য চোখে পড়ার মতো। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা পাখিদের মধ্যে রয়েছে ছোট সরালি, বড় সরালি, লেঞ্জা হাঁস, গারগেনি, রাইনেক, খঞ্জনা, টাইগা, শামুক খোল, জলপিপি, ডাহুক, জিরিয়া প্রভৃতি। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বলেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে এবার লেকগুলোতে পাখি আসা শুরু করেছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর কম সংখ্যক পাখি দেখা গেছে। ট্রান্সপোর্ট-এর পেছনে দর্শনার্থী, শিক্ষার্থীদের আড্ডার জন্য পাখিদের জন্য বেশ সমস্যা হয়ে থাকে। সচেতনতামূলক ব্যানার টানানো হয়েছে এবারও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসম ফিরোজ উল হাসান বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। অতিথি পাখি সংরক্ষণের জন্য আমরা প্রতিবছর নানা উদ্যোগ গ্রহণ করি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলো পরিষ্কার করি যাতে অতিথি পাখির খাদ্য সংকট না হয়। দর্শনার্থীরা যাতে পাখিদের বিরক্ত না করে এজন্য ব্যানার, ফেস্টুন টাঙিয়ে দিই। এছাড়া নির্ধারিত স্থানগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মীর ব্যবস্থা করি, যাতে তারা মানুষকে সচেতন করতে পারে। লেকের পানিতে যাতে মানুষ নামতে না পারে এজন্য বেড়ার ব্যবস্থা করে দিই। দর্শনার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ফিরোজ উল হাসান বলেন, যারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখি দেখতে আসেন তাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, আপনারা পাখিদের বিরক্ত করবেন না। পাখিদের প্রতি ঢিল ছুড়বেন না, জোরে গাড়ির হর্ণ বাজাবেন না। আপনারা যেহেতু পাখিদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন সেহেতু খেয়াল রাখবেন যাতে সৌন্দর্য নষ্ট না হয়। পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বাড়াতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০০ সালে প্রথম পাখি মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব। এরপর ২০০৪ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ এতে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়। প্রতিবছর জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসে পাখি মেলার আয়োজন করা হয়। এছাড়া ২০১৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ :