কামরুজ্জামান খান, সৌদি আরবের মক্কা থেকে : সৌদি আরবের মক্কার অভিজাত এলাকা আজিজিয়ার জীবন বৈচিত্র্য ভিন্ন রকমের। সারাদিন এখানকার সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রায় বন্ধ থাকলেও বিকেলের পর থেকে জমে উঠে বিকিকিনি। জেগে থাকে মধ্যরাত পর্যন্ত। এখানকার বাসিন্দারা অভিজাত পরিবারের হওয়ায় তাদের দিনের সময়টা কাটে আয়েশীভাবে। সন্ধ্যার পর পরিবার নিয়ে তারা ঘুরে বেড়ান। নামিদামি রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কিনে গ্রহণ করেন পার্কে বসে। আলো ঝলমলে এই শহরে কারো নেই কর্মব্যস্ততার চাপ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মক্কার এই এলাকায় পাঁচ তারকা হোটেলের ছড়াছড়ি। পাশাপাশি এলাকার মধ্যে শেরাটন, মিলেনিয়া, ফরচুন, হিল্টন, হলিডে ইনসহ আরো কয়েকটি তারকা হোটেল রয়েছে। যেখানে ধনীরা উঠেন হজ বা ওমরা করতে এসে। আজিজিয়া এলাকা জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন নামিদামি ব্রান্ডের দোকান, স্বর্ণালংকার মার্কেট। আছে বাহারি খাবারের দোকান। মূলত সৌদি আরবের যারা একটু ধনাঢ্য প্রকৃতির লোক তারা এখানে বসবাস করেন। কাবা শরীফ থেকে এই এলাকার দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। পাচ তারকা হোটেলগুলোর কাছে মক্কার সবচেয়ে সৌন্দর্য মন্ডিত মসজিদে এই আজিজিয়ায় অবস্থিত। বিভিন্ন সাইজের চোখ ধাঁধানো জারবাতি দিয়ে সাজানো রয়েছে এই মসজিদ। কার্যত তারকা হোটেলে অবস্থানকারীরা এই মসজিদে ওয়াক্তের নামাজ আদায় করেন। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই নামাজে শরিক হন। নান্দনিক এই শহরের প্রতিটি এলাকায় রয়েছে আধুনিকতা ও আভিজাত্যের ছোঁয়া। সন্ধ্যার পরে স্থানীয় লোকজন পরিবার নিয়ে নিরিবিরি এই এলাকায় ঘুরতে আসেন।
আজিজীয়া এলাকার মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসো একাধিক লোকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, একটু মানসম্মত জিনিস কেনার জন্য মূলত তাদের এখানে আসা। দাম একটু বেশি হলেও গুণগতমান ভাল হওয়া এখানকার মার্কেটগুলোতে নির্দিষ্ট ক্রেতা রয়েছে। যদিও জুয়েলারি দোকানগুলোতে ২২ ক্যারেটের চেয়ে ২১ ক্যারেটের অলংকার বেশি রয়েছে। আর বাংলাদেশী ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি ২২ ক্যারেটে। অনেকে কিনে থাকেন স্বর্ণের বার। এখানে স্বর্ণালংকার কিনলে পরে ১৫ পার্সেন্ট ভ্যাট ট্যাক্স দিতে হয় বাধ্যতামূলক। তাইলে দামাদামিও করা যায়। অবশ্য এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্রেতাদের অলংকার কিনতে আস্থার জায়গায় হচ্ছে জেদ্দা মার্কেট। বাণিজ্যিক এই এলাকার উপর দিয়ে জামারায় শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর মেরে হাজীদের কাবা শরীফের দিকে আসতে হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আজিজের এলাকার সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে যারা আসেন তাদের কাছে এই এলাকা অনেকটাই ভুতুরে মনে হতে পারে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে যখন সবকিছু খোলা শুরু হয় তখন যেন নতুন এক শহরের দেখা পায় দূরদূরান্ত থেকে আশা মানুষের।
Leave a Reply