সংবাদ রিপোর্ট : দেশে ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে সাভার ও আশুলিয়ার দুইজন সিন্ডিকেট গড়ে কাজ করেছেন। এদের একজন সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের শাহজালাল মার্কেটের রিপন এগ সেন্টারের মালিক আনিসুর ররহমান রিপন ও আরেকজন আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফয়সাল সরকার বাপ্পী। ডিমের দাম বৃদ্ধির কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফয়সাল সরকার বাপ্পীর প্রতিষ্ঠানকে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় আরও দুই প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ২০ আগস্ট শনিবার দুপুরে আশুলিয়ায় অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
জানা গেছে, ডিমের নাম প্রতিদিন সন্ধ্যায় নির্ধারণ করা হয়। ঢাকার তেজগাঁও এবং সাভার থেকে এসবের দাম ডাকা হয়। সর্বোচ্চ দাম যিনি ডাকেন তিনি পাইকারী ও খুচরা বাজারের দাম ঠিক করেন। জ¦ালানী তেলের দাম বাড়ার পর রিপন ও বাপ্পী বেশী দামে দর ডাকেন। তাদের সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা।
ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তারা জানান, আশুলিয়ার সরকার মার্কেট এলাকায় ডিমের বিক্রয় কেন্দ্র ফয়সাল এন্টারপ্রাইজের ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল। প্রতিষ্ঠানটির মালিককে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করে প্রতিষ্ঠানটি সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফয়সাল এন্টারপ্রাইজের মালিক আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ফয়সাল সরকার বাপ্পী। আশুলিয়ার বগাবাড়ি এলাকার আসিফ-হোসাইন এন্টারপ্রাইজ ও এসজে এন্টারপ্রাইজকেও কারসাজির অভিযোগে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, ডিমের দাম বাড়ানোর কারসাজির অভিযোগে বগাবাড়ির দুটি দোকান ও সরকার মার্কেট এলাকার ফয়সাল এন্টারপ্রাইজকে মোট সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ডিম যেখান থেকে কেনা হয়েছে সেই রসিদ অনেকে দেখাতে পারছেন না। এ ছাড়া ক্রেতাদেরও ঠিকমতো রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। মূল্য তালিকা টানানোর যে নিয়ম সেটাও তারা মানছেন না। কারসাজির মাধ্যমে অসৎ প্রবণতার প্রমাণ পেয়েছি। তাদের রেজিস্ট্রার বই ঘেঁটে দেখা গেছে ৭ তারিখে প্রতি পিচ ডিমের ক্রয়মূল্য ছিল ৯ টাকা ৪০ পয়সা সেদিন তারা সেটি বিক্রি করেছে ২০ পয়সা লাভে ৯ টাকা ৬০ পয়সায়। ১৭ তারিখে দেখা গেছে তাঁদের ক্রয়মূল্য ছিল ৯ টাকা ৬০ পয়সা, আর বিক্রি করা হয়েছে ১১ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ ডিমের দাম ২০ পয়সা বাড়লেও তারা লাভ করেছে অতিরিক্ত। যা অসৎ প্রবণতা। আব্দুল জব্বার মন্ডল আরো বলেন, ‘আমাদের কাছে ডিম সমিতির তথ্যও এসেছে। আমরা শুনেছি ডিম সমিতি দাম নির্ধারণ করে দেয়। আমরা সাভারে ডিম সমিতিতেও যাব। ডিমের দাম নির্ধারণ করার প্রক্রিয়াও আমরা দেখব। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে শুরু করেছি, প্রয়োজনে আমরা এর ওপরেও যাব। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে।’
এদিকে রিপন সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ালেও তিনি নিয়মিত দোকানে বসেন না। শাহজালাল মার্কেটে তার দোকান ভাড়া দেওয়া আছে। ঘটনার পর থেকে তিনি ওই মার্কেটে যাচ্ছেন না। পুলিশ ও গোয়েন্দারা তার ব্যাপারে খোঁজখবর করছে।
Leave a Reply