1. kamruzzaman78@yahoo.com : kamruzzaman Khan : kamruzzaman Khan
  2. ssexpressit@gmail.com : savarsangbad :
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন

এলো প্রাণের মাস, ভাষার মাস

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
সংবাদ ডেস্ক: ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশেফেব্রুয়ারি’—রক্তে রাঙানো সেই ভাষা আন্দোলনের মাস শুরুহলো। আজ ১ ফেব্রুয়ারি। বছর ঘুরে আবারও ফিরে এলোরক্তস্নাত এই মাস। ভাষা আন্দোলনের উত্তাল স্মৃতিমাখাএ মাস এলেই বিদ্যুৎচমকের মতো বাঙালি হৃদয়ে ভেসে ওঠে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর—এসব ভাষা শহীদদের নাম। সাতচল্লিশে দেশভাগের পরেই যখন বাঙালিরভাষার ওপর আঘাত এলো, তখন বুকের রক্ত ঢেলে লেখা হলোএক নতুন ইতিহাস। ভাষা আন্দোলনের সেই লড়াই থেকেসঞ্চিত শক্তিই পরবর্তীকালে যুগিয়েছে গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণা।
ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও অন্যদিকে গৌরবোজ্জ্বল। পৃথিবীর একমাত্র জাতি বাঙালি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিল। রক্ত ঝরানো সেই দিন এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও স্বীকৃত। বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধে, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে,জাতির স্বকীয়তা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ভাষা আন্দোলনসব সময় আলোকবর্তিকার মতো মূর্ত হয়ে ওঠে। এখনো জাতির যে কোনো ক্রান্তিকালে ভাষা আন্দোলন আমাদের প্রেরণা হয়ে দেখা দেয়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ভাষা আন্দোলন জাতির বীরত্বপূর্ণ ঐতিহ্যের পরিচয় তুলে ধরে। ভাষা আন্দোলন তাই বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীক। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারির সেই আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেরণা। তারই পথ ধরে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। ১৯৫২ সালের এ মাসেই রক্তঝরা ভাষা আন্দোলন তীব্রতর রূপ ধারণ করেছিল। মাতৃভাষা বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার সংগঠিত দাবি ও আন্দোলনকে বানচাল করার জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম গুলি চালানো হয়েছিল। তাতে কয়েকটি অমূল্য প্রাণ সালাম, রফিক,জব্বার, শফিউর, বরকত মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তাই গভীর বেদনায়, মহিমায় ও পবিত্র আবেগে ওই দিনটিকে ইতিহাসের পাতায় রক্তের অক্ষরে লেখা হয়ে যায়। বিশেষ সেই তারিখে শহীদদের আত্মদান একটি কিংবদন্তী রূপ লাভ করে। আজ তাই একুশে ফেব্রুয়ারি একটি অভিধা, একটি ধ্বনি, একটি প্রতীকে পরিণত হয়েছে। পরিণত হয়েছে জাতির জাগরণের প্রতীকে। ফেব্রুয়ারি তাই অঙ্গীকারের মাস, প্রত্যয় বদ্ধ হবার মাস। ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে সমাজে, রাষ্ট্রে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শপথ নেওয়ার মাস ফেব্রুয়ারি। অফিস-আদালত, শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাকে ছড়িয়ে দেবার অঙ্গীকারের মাস ফেব্রুয়ারি। ভাষার মাসে ভাষাকে নিয়ে নানা আয়োজন শুরু হয়। তবে, শুধু ভাষা নয় বরং জাতি হিসেবে আমাদের করণীয় নিয়েও আলোচনা চলে। শিল্প-সাহিত্য-সংগীতসহ শিল্পের প্রতিটি ক্ষেত্রে একুশ নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা নিয়ে আসে। একুশে উপলক্ষে বাংলা একাডেমির বইমেলা সারা দেশের সাহিত্যানুরাগী মানুষদের এক করে। বায়ান্নর আগুন ঝরা সেই দিনগুলো বিশ্বের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে, থাকবে। ভাষা শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত ফেব্রুয়ারি এই দেশের মানুষের চেতনায় এক অনির্বাণ বাতিঘর। এই আলোর স্পর্শে অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার এবং প্রবল দেশাত্মবোধের অন্যরকম এক আবেগ ও উদ্দীপনায় জেগে ওঠে সর্বস্তরের মানুষ। আর সেজন্য ঐতিহাসিক সত্য হিসেবে এ কথা আমাদের স্মরণে রাখতে হবে, বাঙালি ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে। আর ভাষা আন্দোলনের বিপুল অর্জনের পাশাপাশি আমাদের ব্যর্থতাও রয়েছে। এই ব্যর্থতা আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে। এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার, এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ :