বিশেষ প্রতিনিধি : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) হাবিবুর রহমান। তিনি ডিএমপির ৩৬তম কমিশনার হচ্ছেন। হাবিবুর রহমান বিসিএস ১৭তম ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি ডিএমপি সদরদপ্তরের ডিসি, ঢাকা জেলার এসপি, পুলিশ সদরদপ্তরে ডিআইজি (প্রশাসন) ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। হাবিবুর রহমান ১৯৬৭ সালে গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। রবিবার কিংবা সোমবার নতুন ডিএমপি কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা এমন তথ্য জানিয়েছেন। জানা গেছে, বর্তমান ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২ অক্টোবর। নানা কারণে বর্তমান ডিএমপি কমিশনারের চুক্তির মেয়াদ আর বাড়াতে চাচ্ছে না সরকার। তাই ২ অক্টোবরের পর নতুন কমিশনার পেতে যাচ্ছে পুলিশের সবচেয়ে শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ডিএমপি। নতুন ডিএমপি কমিশনারের সময় অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের আগে ও পরে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলার দায়ভার থাকবে নতুন ডিএমপি কমিশনারের উপর। সবদিক বিবেচনায় এবারের কমিশনারের গুরুত্ব অনেক বেশী।
এদিকে সম্ভাব্য ডিএমপি কমিশনার হিসেবে ১৫তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) মো. মাহাবুবর রহমান, ১৫তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী, একই ব্যাচের কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের নাম সর্বশেষ আলোচনায় ছিল। আবার বর্তমান কমিশনারের মেয়াদ বৃদ্ধির তোড়জোড়ও ছিল। সবকিছু ছাপিয়ে ডিএমপি কমিশনার হতে যাচ্ছেন হাবিবুর রহমান।
সূত্র বলছে, ডিএমপি কমিশনারের পদে কে আসবেন সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে অনুমোদন দেন। পুলিশ হিসেবে কর্মজীবনের সফলতা, গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা বিবেচনায় এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়। সিনিয়র-জুনিয়র নির্বিশেষে যে কেউ এ দায়িত্ব পেতে পারেন। হাবিবুর রহমানকে ডিএমপি কমিশনার করতে প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে সায় দিয়েছেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, পেশাগত ও মানবিক কাজের বাইরে সফল ক্রীড়া সংগঠক হিসাবে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের সহসভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন হাবিবুর রহমান। পাশাপাশি মানুষের সেবা করার জন্য গড়েছেন উত্তরণ ফাউন্ডেশন নামে একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। তার একক প্রচেষ্টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে টেলিকম ভবনে প্রতিষ্ঠিত হয় পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। ২০১৮ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের গৌরবান্বিত ভূমিকা তুলে ধরে ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ নামের একটি বই সম্পাদনা করেন ডিআইজি হাবিব। অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় হাবিবুর রহমানের গবেষণাগ্রন্থ ‘ঠার: বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা’। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে নিয়ে বই সম্পাদনা করেছেন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয় ‘নন্দিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান’ বইটি।
Leave a Reply