সংবাদ ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ৫১১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি ১৩টি মুজিবকেল্লাও প্রস্তুত করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগে থেকে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হবে। ২৪ অক্টোবর সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন পুরোপুরি প্রস্তুত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা ও মহানগরীতে ৫১১টি আশ্রয়কেন্দ্র, এক হাজার ৪৪০টি বিদ্যালয় এবং ৯টি মুজিবকিল্লা ছাড়াও আশপাশের ভবনগুলোতে প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য প্রায় ১৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায় মনিটরিংয়ের জন্য কোস্টগার্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সভায় দুর্যোগ মোকাবিলায় চট্টগ্রামের জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ২৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ পাঁচ লাখ টাকা, এক হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ৭০০ কার্টন বিস্কুট, ৫০০ কেক বরাদ্দের কথা জানানো হয়।
সভায় দুর্যোগকালীন জরুরি সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে জরুরি সেবা সেল চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তাছাড়া সাগরের তীরবর্তী উপজেলাগুলোতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের প্রস্তুতকৃত আশ্রয়কেন্দ্রে দ্রুত শুকনা খাবার ও ওষুধ পাঠাতে বলা হয়। স্থানীয় পর্যায়ে দুর্যোগকালীন যে কোনো ধরনের ব্যয় নির্বাহের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়। জরুরি ভিত্তিতে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং কার্যক্রম চলমান রাখতে বলা হয়। বাংলাদেশ বেতারকে নিয়মিত বুলেটিন বার্তা প্রচার করতে বলা হয়। বিভিন্ন এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য কোস্টগার্ডকে তাদের বোটগুলো প্রস্তুত রাখতে বলা হয়। সাগরে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাসমূহ নিরাপদ অবস্থান গ্রহণের বিষয়টি তদারকি করতে বলা হয়। দুর্যোগে হতাহতের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া পাহাড়ে বসবাসকারীদের রক্ষায় স্থানীয় সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রয়োজন সাপেক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে জরুরি ত্রাণ ও সহায়তার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শেষে জেলা প্রশাসক সরকারি সকল দপ্তরকে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে অনুরোধ জানান। দুর্যোগ মোকাবিলায় অতীতের ন্যায় মানুষের জান ও মাল রক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
Leave a Reply