সংবাদ ডেস্ক: বরগুনা, পিরোজপুর, বগুড়া পাবনা ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় কালবৈশাখীর সময় বজ্রপাতে চার কৃষক ও দুই এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। ২৯ এপ্রিল শনিবার দুপুর ও বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। বরগুনায় খলিলুর রহমান নামে এক কৃষক, সিরাজগঞ্জে আব্দুল মালেক ও মো. সোলেমান শেখ নামের আরো দুই কৃষক এবং পিরোজপুরে হোসনে আরা বেগম নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। বরগুনার পাথরঘাটায় মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে কৃষক খলিলুর রহমান মারা যান। তিনি ওই উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের তাফালবাড়িয়া এলাকার মৃত লেহাজ উদ্দিনের ছেলে। পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ আলম হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুপুর দুইটার দিকে বাড়ির পাশে ধান খেতের মাঠে থাকা গরু আনতে যান খলিল। গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। শনিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের বাগডুমুর গ্রামে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মাঠে ধান কেটে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) সুমন কুমার দাস। তিনি বলেন, মাঠে ধান কাটছিলেন এই দুই কৃষক। হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে বাড়িতে ফিরছিলেন তারা। কিন্তু পথিমধ্যে বজ্রপাতের কবলে পড়ে দুজন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ দুটি বর্তমানে হাসপাতালেই রয়েছে। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বজ্রপাতে হোসনেয়ারা বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের নলী জয়নগর গ্রামে। নিহত হোসনেয়ারা বেগম ওই গ্রামের আব্দুল ছালাম এর স্ত্রী। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধূ ওই দিন দুপুরে সাড়ে তিনটার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় তাদের নিজ বাড়ির পিছনের মাঠে ঘাস খেতে থাকা গরু আনতে যান। এ সময় বজ্রপাতে ওই গৃহবধুর মৃত্যু হয়। মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ওই দিন বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে এক গৃহবধূর মৃত্যু খবর পেয়েছি। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পাবনার আটঘরিয়া ও আমিনপুরে বজ্রপাতে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৯ এপ্রিল শনিবার দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যেই পৃথক বজ্রপাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের বাড়ইগ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী এনামুল হক (১৯) ও আমিনপুরের গোবিন্দপুর গ্রামের মো. আকবর প্রমানিকের ছেলে মো. মনিরুজ্জামান (৪৩)। বিষয়টি নিশ্চিত করে আটঘরিয়ার একদন্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন আলাল বলেন, এনামুল হক বিকেল চারটার দিকে মাঠে ঘাস কেটে বাড়ি ফেরার পথে প্রচন্ড বৃষ্টিপাতের মধ্যে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, কৃষক মনিরুজ্জামান বিকেলে বাড়ির পাশে মাঠের কাজ করা অবস্থায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। পরে বৃষ্টির মধ্যেই তিনি বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাত হলে মৃত্যু হয়। এবিষয়ে পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, কৃষি কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে তাদের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বগুড়ার নন্দীগ্রামে বজ্রপাতে লোকমান আলী (৬০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের সিংজানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন বুড়ইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া। তিনি জানান, শনিবার বিকেলে কৃষক লোকমান আলী মাঠে ঘাস কাটতে যান। এ সময় বিকট শব্দে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যায়। লোকমানের মরদেহ পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে নিয়ে গিয়েছে।
Leave a Reply