রাজবাড়ী জেলার মৌচাষি সিদ্দিক মিয়া এবার ৫০টি মৌমাছির বক্স পেতেছেন ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামের সরিষাচাষি হামিদ আলীর সরিষা ক্ষেতের পাশে। তিনি বলেন, আমার বক্স আছে ৫০ পিসের মতো। এই বক্সগুলোতে অস্ট্রেলিয়ার মেলিফিয়া প্রজাতির মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করা হয়। একেকটি বক্সে প্রায় লক্ষাধিক মৌমাছি থাকে। এখন পর্যন্ত আমার ৫০ হাজার টাকার মতো মধু বিক্রি হয়েছে। আশাকরি আরো লাখ খানেক টাকার মধু বিক্রি করতে পারবো। ফুল থেকে মৌমাছিদের মধু সংগ্রহের সময় পরাগায়নের ফলে বেড়ে যায় সরিষার ফলনও। এতে এতে মৌয়ালদের পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন সরিষা চাষিরাও। এ বিষয়ে সরিষা চাষি হামিদ মিয়া বলেন, প্রতি বছরই আমার ক্ষেতে মৌয়ালরা বক্স বসায়। সরিষা ক্ষেত থেকে মধু আহরণ করলে পরাগায়ন হয়। এতে উৎপাদন বাড়ে। তাই তিনি ও আশপাশের জমির মালিকেরা মৌচাষিদের উৎসাহিত করছেন।
তিনি আরও জানান, এবার আমি ৩ বিঘা জমিতে সরিষা বুনেছি। আশাকরি আল্লাহর রহমতে এবারও অনেক ভালো ফলন হবে। এতে আগের ফসলের লসের টাকা কিছুটা হলেও উঠে আসবে। রাজধানীর মিরপুর থেকে বাইকে করে স্ত্রীকে নিয়ে পাশের একটি থিমপার্কে ঘুরতে এসেছিলেন তিনি। পথিমধ্যে সরিষা ক্ষেতের পাশে মধুর বক্স দেখতে পেয়ে বাইক থামিয়ে ২ কেজি মধু কিনে নিলেন। তার মতে চোখের সামনে এমন খাঁটি এত কমদামে কিনতে পেরে বেশ খুশি তিনি।সুমন আহমেদ, ক্রেতাএ দিকে, খাঁটি মধু পেতে এসব ক্ষেতের পাশে বসানো বক্সের মৌয়ালদের কাছে ছুটে আসেন অনেকে। খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি মধু বিক্রি করেন ৪শ থেকে ৫শ টাকা দরে। এ সময় মধু কিনতে আসা সুমন আহমেদ নামে এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রাজধানীর মিরপুর থেকে বাইকে করে স্ত্রীকে নিয়ে পাশের একটি থিমপার্কে ঘুরতে এসেছিলেন তিনি। পথিমধ্যে সরিষা ক্ষেতের পাশে মধুর বক্স দেখতে পেয়ে বাইক থামিয়ে ২ কেজি মধু কিনে নিলেন। তার মতে চোখের সামনে এমন খাঁটি এত কমদামে কিনতে পেরে বেশ খুশি তিনি। পাশেই স্কুল ব্যাগ কাধে মাহমুদ নামে ক্লাস সিক্সের এক শিক্ষার্থী এসেছে মধু নিতে। তার সঙ্গে কথা বলতেই জানালো, বাসায় তার বৃদ্ধ দাদির খুব কাশি হয়েছে। তাই মা ২০০ টাকা দিয়ে বলেছে স্কুল থেকে ফেরার পথে দাদির জন্য আধা কেজি মধু নিয়ে যেতে। তাই সে এসেছে এখান থেকে মধু নিতে। এ বছর ধামরাই উপজেলায় ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকরা। পাশাপাশি এসব ক্ষেতে প্রায় ৫ শতাধিক মৌমাছির বক্স স্থাপন করেছেন মৌয়ালরা। মৌমাছি মূলত সরিষার ফুলে উড়ে উড়ে বসে মধু সংগ্রহ করে। এতে সরিষা ফুলে সহজে পরাগায়ন ঘটে। তাই সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ চাষের বাক্স স্থাপন করলে সরিষার ফলন অন্তত ২০ শতাংশ বাড়ে। এতে মৌচাষিরা মধু আহরণ করে যেমন লাভবান হন তেমনি সরিষা চাষিরাও পান বেশি ফলন।মো. আরিফুল হাসান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, ধামরাই
মৌচাষকে পেশা হিসেবে নিয়ে অনেকে হয়ে উঠছেন স্বাবলম্বী। বাড়ছে গ্রামীণ অর্থনীতির পরিসরও। চলতি মৌসুমে ধামরাই থেকে প্রায় ৬ থেকে ৭ টন মধু সংগ্রহ করবেন মৌচাষিরা। অন্যদিকে, ফুল থেকে মধু সংগ্রহের ফলে সরিষার ফলনও বাড়বে প্রায় ৮ হাজার মেট্রিক টন। এমনটাই আশাবাদ উপজেলা কৃষি বিভাগের। এ ব্যাপারে ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুল হাসান জানান, এ বছর ধামরাই উপজেলায় ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকরা। পাশাপাশি এসব ক্ষেতে প্রায় ৫ শতাধিক মৌমাছির বক্স স্থাপন করেছেন মৌয়ালরা। মৌমাছি মূলত সরিষার ফুলে উড়ে উড়ে বসে মধু সংগ্রহ করে। এতে সরিষা ফুলে সহজে পরাগায়ন ঘটে। তাই সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ চাষের বাক্স স্থাপন করলে সরিষার ফলন অন্তত ২০ শতাংশ বাড়ে। এতে মৌচাষিরা মধু আহরণ করে যেমন লাভবান হন তেমনি সরিষা চাষিরাও পান বেশি ফলন।
Leave a Reply