সংবাদ রিপোর্ট: সাভার উপজেলার জিরানী এলাকায় ফুটপাতে বসেই বিভিন্ন ওষুধের পসরা সাজিয়ে বসেছেন রাসেল মিয়া নামের এক ব্যক্তি। নিজেকে চিকিৎসক দাবি করে দিচ্ছেন নানান রোগের চিকিৎসাও। তিনি জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ফুটপাতে বসে শরীরে দুর্বলতা কাটানো, পেট ফুলা, মাথা ঝিন ঝিন করা, রক্ত পরিষ্কার, দৈহিক গঠন বৃদ্ধি করাসহ নানা জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন তিনি। বিভিন্ন নামের যৌন উত্তেজক ও ভিটামিনও রয়েছে তার কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না নিয়ে চিকিৎসা এবং ওষুধ বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১০ বছর ধরে ওষুধ বিক্রি করতে করতে অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাই রোগীও ভালো মিলছে। শুধু রাসেল মিয়া নন এমন অনেকেই ফুটপাত কিংবা অলি-গলির ফার্মেসিতে হরহামেশাই বিক্রি করছেন মানহীন ও নিষিদ্ধ ওষুধ। অধিক মুনাফার আশায় অনেকে আবার তাদের ইচ্ছেমতো দিচ্ছেন অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজ আর বদলে দিচ্ছেন ওষুধের গ্রুপ।
জিরানী, জামগড়া, পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় কয়েকটি ওষুধের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, যে যেভাবে পারছে বিক্রি করছে অ্যান্টিবায়োটিক। নিষিদ্ধ ভায়াগ্রা ছাড়াও নানান রকমের ওষুধ সাজিয়ে রেখেছেন। আমিনুল, জাহাঙ্গীর, সামান, এরশাদ, ফরিদসহ কয়েকজন ওষুধ বিক্রেতা ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, রোগীরা এসে চাইলেই দিতে হয়। নাহলে তারা অন্য দোকানে চলে যায়। কখনো কখনো তাদের ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র আনতে বললে তারা অনীহা প্রকাশ করেন। তবে এমন ওষুধ সেবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন চিকিৎসকরা। তাদের মতে, স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নয় বরং হতে পারে স্বাস্থ্যহানি। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাজীব হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিত রাখতে মজুত প্রক্রিয়াটাও গুরুত্ব বহন করে। ফুটপাত কিংবা অনুমোদিত নয় এমন ওষুধ সেবন ঝুঁকিপূর্ণ। নষ্ট হতে পারে কিডনি বা লিভার। এসব ওষুধ খেতে খেতে একসময় যখন জানতে পারবে ক্ষতির কারণ তখন আর ফিরে আসার সুযোগ নেই। তাই সবাইকে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতে হবে। এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক আইয়ুব হোসেন বলেন, ফুটপাতে ওষুধ বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। যারাই করছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, ফার্মেসিগুলোতে নজরদারি চলছে। যারাই চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া নিষিদ্ধ ওষুধ বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।
Leave a Reply