সংবাদ রিপোর্ট: সাভার পরিবহনের একটি বাসে যাত্রী উঠিয়ে কয়েকজন গরুর বেপারীর ১৯ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় ওই বাসের চালক নাছির হোসেন (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বাসটিও জব্দসহ তার কাছ থেকে ডাকাতি করা ২০ হাজার টাকাও উদ্ধার হয়েছে। সোমবার ভোরে আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেপ্তারকৃত নাছির হোসেন কেরানীগঞ্জের আলীপুরের মৃত লিচু মিয়ার ছেলে। বর্তমানে আশুলিয়ার বাড়ইপাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে সাভার পরিবহন বাস চালানোর পাশাপাশি বাসে যাত্রী উঠিয়ে ডাকাতি করে আসছিলো বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে স্থানীয়রা জানায় ডাকাত সর্দার নাছির হোসেন সাভারের রাজ ফুলবাড়িয়া শোভাপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তার আরেক ভাই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে এখনও জেলহাজতে রয়েছে। সাভার পরিবহন বাসে ডাকাতির ঘটনায় ভুক্তভোগী গরুর বেপারী হলেন- সিদ্দিক হোসেন (৫০), কিসমত আলী (৫৩), হানফি (২৮) ও কালু (৩০)। তাদের সবার বাড়ি মেহেরপুর জেলা গাংনী থানার রামকৃষ্ণপুর গ্রামে। তারা কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে গাবতলীর হাটে গরু বিক্রি করতে গিয়েছিলেন। থানা পুলিশ ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত ৮ জুলাই গাবতলী গরুর হাটে ১২ টি গরু বিক্রি করে ১৯ লাখ টাকা নিয়ে গ্রামেরবাড়ি মেহেরপুরের উদ্দেশ্যে ভুক্তভোগী গরুর বেপারীরা সাভার পরিবহনের বাসটিতে উঠেন। বাসটি কিছুদুর যাওয়ার পরই বাসের কন্ট্রাকটর তাদের কাছে ভাড়া চায়। এসময় ভুক্তভোগী গরুর বেপারী সিদ্দিক হোসেন পড়ে ভাড়া দিতে চান। এসময় বাসের কন্ট্রাকটর দরজা বন্ধ করে উচ্চস্বরে গান ছেড়ে দেয়। পরে বাসে থাকা অন্যান্য ডাকাতদের সহযোগিতায় গরুর বেপারীদের হাত-পাঁ ও চোখ বেঁধে মারধর করতে থাকে। এসময় তাদের কাছে থাকা ১৯ লাখ ১২ হাজার ৯০০ টাকা এবং বেশ কয়েকটি মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী গরুর বেপারীদেরকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের শোভাপুর এলাকার কাজী এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড কারখানার সামনে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার হয়ে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যান গরুর বেপারীরা। পরে ১৩ জুলাই ভুক্তভোগী গরুর বেপারী সিদ্দিক হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১৩ থেকে ১৪ জনের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। এঘটনায় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে সোমবার ভোরে সাভারের বাড়ইপাড়া এলাকা থেকে সাভার পরিবহন বাসের চালক ডাকাত সর্দার নাছির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ট্যানারী ফাঁড়ি ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ রাসেল মোল্লা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ডাকাত সর্দার নাছির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত নাছির হোসেনকে আদালতে পাঠানো হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। তিনি আরও বলেন, এরা একটি সংগবদ্ধ ডাকত চক্র। মুলত পরিবহন চালানোর আড়ালে দির্ঘ্যদিন ধরে তারা সুযোগ বুঝে ডাকাতি করে আসছিলো। এঘটনায় জড়িত বাকী ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানোর পাশাপাশি লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি
Leave a Reply