
সংবাদ রিপোর্ট : সাভারে বিশেষ শ্রেণির মর্যাদার পৌরসভা থাকলেও আশুলিয়াকে পৃথক পৌরসভা করার তোড়জোড় শুরু হয় কয়েক বছর আগে। ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এজন্য আধা সরকারিপত্র (ডিও) দিয়েছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় জনমত যাচাই করেছিল। তখন স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেকে এর বিরোধীতা করেন। পরে স্পর্শকাতর একটি কর্তৃপক্ষের আপত্তিতে আটকে যায় পৌরসভা গঠন প্রক্রিয়া। যদিও পৌরসভা গঠন হলে স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সেখানকার মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন ছিল। পৌরসভা প্রক্রিয়া আটকে গেলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ট্রাক প্রতিকে সংসদ সদস্য হন।
আশুলিয়া পৌরসভা গঠন পক্রিয়া ভেস্তে গেলেও সাভার পৌরসভাসহ ১২টি ইউনিয়নে কাজ চলছে; কেথাও জনপ্রতিনিধি- কোথাও প্রশাসক দিয়ে। এর মধ্যে গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ স্বাক্ষরিত এক পত্রে সাভার উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে সিটি কর্পোরেশন করার প্রস্তাবনার খবর প্রকাশ হয়েছে। সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া মিলিয়ে সাভার সিটি করপোরেশন এবং কেরানীগঞ্জকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা বা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের পর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে সাভার পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক চলতি বছরের সেপ্টেম্বর প্রথম পক্ষের পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রস্তাব বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে সরকার। প্রস্তাবটি প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক অনুমোদনের পর প্রস্তাবের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক বাস্তবায়ন অগ্রগতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী। এর ফলে উন্নয়ন বঞ্চিত এবং অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার কিছুটা হলেও দূর হবে এবং প্রাপ্য নাগরিক সুবিধা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা যাবে।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে উত্থাপিত ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র এবং জনসংখ্যার চাপ মিলিয়ে সাভার এক বিশাল নগর এলাকায় পরিণত হয়েছে। সাভার পৌরসভা থাকলেও তা নাগরিক চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। পৌরসভার সীমিত সম্পদ ও জনবল দিয়ে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার নাগরিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সাভারের আশুলিয়া অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক গার্মেন্টস শিল্প, শ্রমিকবসতি এবং আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। আশুলিয়া এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে পরিকল্পিত নগরায়ণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সুবিধা, নিরাপদ পানি সরবরাহ কিংবা পরিবেশ সংরক্ষণের মতো নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার সক্ষমতাও ইউনিয়ন পরিষদের নেই। ফলে আশুলিয়া এলাকার জনগণকে যানজট, অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন ও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
Leave a Reply