সংবাদ রিপোর্ট: ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের কেন্দ্রীয়ভাবে সাভারে উদ্বোধন করা হয়েছে। সারা দেশে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ। ২০ মে শুক্রবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন। সুষ্ঠু ভোটের জন্য ভোটারদের উপস্থিতি খুব প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বাধার সম্মুখীন হলে প্রতিবাদ করতে পারলে তার ভোটাধিকার সহজ হয়। সিইসি আরো বলেন, আমাকে বাহিরের কোন দেশে নির্বাচন কমিশনার করলে, আমি চা খেতে খেতেই নির্বাচন সম্পন্ন করে ফেলতাম। তবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পেশার বেড়ে যায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের সচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার একেএম মাসুদুজ্জামান, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবীর, ঢাকা জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল ইসলাম, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন সরদার, ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বেগম মাহফুজা আক্তার, সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুরুল আলম রাজীব, সাভার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল গনি ও সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলাম। এছাড়া সাভার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাবশিরা লিজার সঞ্চালনায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ মুনীর হোসাইন খান। পরে সিইসি উদ্বোধনী সভা শেষে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ।অনুষ্ঠান শেষে সাভার উপজেলা পরিষদের কোয়ার্টারে একটি বাড়িতে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজে উপস্থিত থেকে এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন।এদিকে মোট চারটি ধাপে এই কার্যক্রম চলবে। প্রথম ধাপে শনিবার থেকে ৯ জুন পর্যন্ত ৬৪ জেলার ১৩৯টি উপজেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর হালনাগাদ কার্যক্রমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবার আগামী তিন বছরের মধ্যে যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য (১৮ বছর) হবেন, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সে হিসাবে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম, এই হালনাগাদ কার্যক্রমে তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৫ বা তার আগে তাদের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আগামী বছরের ২ মার্চ প্রকাশ করা হবে। আর যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৬ বা তার আগে, তাদের অন্তর্ভুক্ত করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০২৪ সালের ২ মার্চ এবং যাদের জন্ম ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে, তাদের অন্তর্ভুক্ত করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০২৫ সালের ২ মার্চ। ইসি জানিয়েছে, যাদের জন্ম ২০০৫ সালের আগে, কিন্তু বিভিন্ন কারণে ভোটার হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি, তারাও হালনাগাদ কার্যক্রমে ভোটার হতে পারবেন। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে মৃত ভোটারের তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। এ সময় ভোটার স্থানান্তরের আবেদনও করা যাবে। নির্বাচন কমিশন নিয়োজিত তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন। ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), পিতা/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ইউটিলিটি (পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস) বিলের কপি প্রয়োজন হবে। তথ্য সংগ্রহের পর নিবন্ধন কেন্দ্রে ভোটারদের নিবন্ধন করা হবে ধাপে ধাপে। উপজেলা পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ এবং সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় ওয়ার্ড পর্যায়ে নিবন্ধন কেন্দ্র স্থাপন করে ভোটারদের ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ গ্রহণ করে ভোটার নিবন্ধন করা হবে। এ সময় মূল তথ্যের প্রিন্ট কপি দেওয়া হবে ভোটারদের।
Leave a Reply