সংবাদ রিপোর্ট: সাভার নামাবাজার কাঠপট্টিতে এখন নৌকা বিক্রির ধুম পড়েছে। বর্ষাকালে নদীতে পাল তোলা নৌকা চোখে কম পড়লেও কোষা নৌকা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছে। নৌকার হাটের জন্য বড় বাজার হিসেবে সাভার নামাবাজার বেশ প্রসিদ্ধ। গত বছরের তুলনায় কাঠের দাম বেশি হওয়ায় এবার নৌকার মূল্য একটু বেশি। তা হলেও জমে উঠেছে নৌকা বিক্রি এবং ব্যস্ত হয়ে উঠেছে নৌকার কারিগররা। বর্ষার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নৌকার চাহিদাও বাড়তে থাকে। এসময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নৌকার পাইকাররা আসেন সাভারের নামাবাজার হাটে পাইকারি নৌকা কিনতে। এ মৌসুমে একদিকে নৌকা ব্যাবসায়ীরা যেমন লাভবান হয় অন্যদিকে তাদের সহযোগীসহ স মিল এবং কাঠের দোকাগুলোতেও বেচাকেনা বৃদ্ধি পায়। ফলে এ নৌকা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। এ সময় প্রতিটি দোকানেই চলে নৌকা তৈরি এবং বিক্রির ব্যস্ততা। মানিকগঞ্জ, ঘিওর, আরিচা, টাঙ্গাইল, মির্জাপুর, আশুলিয়া, ধামরাই, চাকুলিয়া, বনগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নৌকা কিনতে আসেন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। সরজমিনে ঘুুরে দেখা যায়, প্রতিটি কাঠের দোকানেই তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন সাইজের নৌকা। এর মধ্যে কিছু নৌকা আগে থেকেই অর্ডারি আবার কিছু রেডিমেট তৈরী করে রাখা হচ্ছে বিক্রির জন্য। মেহগনি, চাম্বল, কড়াই ও রেইনট্রি গাছসহ বিভিন্ন জাতের গাছ দিয়ে বানানো হচ্ছে এসব নৌকা। সারি সারিভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। নৌকার কাঠ ও আকারভেদে দামের ভিন্নতা রয়েছে। আয়শা ফার্ণিচার এন্ড ডোরের মালিক মো: জহিরুল ইসলাম জানান, বর্ষার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নৌকার চাহিদাও বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় পানি উঠে যাওয়ার কারনে নৌকা বিক্রির পরিমাণ এবং মূল্য বাড়ছে বলেও জানান তিনি। মেসার্স সাখাওয়াত টিম্বার এন্ড স মিলের নৌকা কারিগর কামরুল ইসলাম জানান, বর্ষায় বিভিন্ন জায়গায় পানি উঠে যাওয়ায় নৌকার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবমিলিয়ে এ বাজার থেকে প্রতিদিন প্রায় দু’শতাধিক নৌকা বিক্রি হয়। তাদের তৈরি বড় সাইজের ৫০০০-৬০০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৪০০০-৪৫০০ টাকা এবং ছোট সাইজের ৩০০০-৩৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয় এসব নৌকা। টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুরের মির্জাপুর এলাকা থেকে নৌকা কিনতে আসা ক্রেতা রাজ্জাক বলেন, এ হাটে একসঙ্গে অনেক নৌকা তৈরির দোকান এবং কারখানা থাকায় দেখেশুনে প্রতি বছরই এ বাজার থেকে সাশ্রয়ী দামে নিজের পছন্দ অনুযায়ী নৌকা কিনতে পারি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার নৌকা প্রতি মূল্য ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা বেশি।
Leave a Reply