সংবাদ রিপোর্ট: সাভারে ব্যবসায়ী শফিকুল বারী চৌধুরী ওরফে বকুল (৫৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাকে ভাড়াটে খুনি দ্বারা হত্যা করেন তারই ব্যবসার অংশীদার এম এ মাজেদ (৬২)। হত্যার তিন বছর পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২২ মার্চ মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপপরিদর্শক মো. সালাউদ্দিন। এর আগে ২২ মার্চ বিকেলে সাভার পৌরসভার তালবাগ এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সাভার পৌরসভার তালবাগ এলাকার মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে। তিনি শফিকুল বারী চৌধুরী ওরফে বকুলের সঙ্গে ঠিকাদারি ব্যবসা ও জমির ব্যবসা করতেন বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে ২০১৯ সালের ২১ মার্চ সন্ধা সাড়ে সাতটার দিকে শফিকুল বারীকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। পরে রাত ১টার দিকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় সাভার মডেল থানা পুলিশ। একই সঙ্গে রুমা নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের রহস্য সম্পর্কে সিআইডি পুলিশ জানায়, শফিকুল বারী এবং এম এ মাজেদ দুজনই অংশীদারি ব্যবসা করতেন। এম এ মাজেদের কাছে লভ্যাংশের প্রায় আট লাখ টাকা পেতেন শফিকুল। পরে তিনি লভ্যাংশের টাকা দাবি করলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মাজেদ। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২১ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শফিকুলকে ডেকে নেন মাজেদ। পরে তাকে পার্শ্ববর্তী খুনি মাসুমের বাসায় কৌশলে নিয়ে যান। এ সময় মাসুম লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পুলিশ আরও জানায়, বকুলের মরদেহ মাসুমের মা এবং এম এ মাজেদ গুম করার চেষ্টা করেন। পরে পরকীয়ার নাটক সাজিয়ে রুমা নামের এক আসামিকে সাভার থানায় পাঠান। নিজে বাঁচতে পরকীয়ার জেরে মাসুম বকুলকে খুন করে পালিয়ে গেছেন বলে তার মাকে দিয়ে স্বীকারোক্তি দেওয়ান। সাভার থানা পুলিশ রাতে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে অ্যাডভোকেট শাকিলা আফরোজ সীমা বাদী হয়ে দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলা পর মাসুমের মা মোর্শেদাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার পরই এম এ মাজেদ গা ঢাকা দেন। এদিকে হত্যাকারী মাসুম গত ২০১৯ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। তাকে আদালতে পাঠানো হলে এম এ মাজেদের কথামতো ব্যবসায়ী শফিকুল বারী চৌধুরী ওরফে বকুলকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ মামলাটির দায়িত্বভার গ্রহণ করে এবং গতকাল মাজেদকে গ্রেপ্তার করে। পরে মাজেদকে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানায় পুলিশ।
Leave a Reply