সংবাদ রিপোর্ট : ঢাকার সাভারের তালবাগ এলাকায় স্বপ্না (১৯) নামে একজন গৃহকর্মী পুলিশ সদস্যের বাড়িতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । পরে ওই গৃহকর্মী পালিয়ে ব্যাংক কলোনীর একটি মোটর গ্যারেজে আশ্রয় নিলে স্থানীয়রা তাকে সাভার থানায় নিয়ে আসেন । নির্যাতনের শিকার স্বপ্না আক্তার জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানার চরবক্সুর গ্রামের মৃত ছব্দুল মিয়ার মেয়ে। অভাবের তাড়নায় দেড় বছর পূর্বে বাসা বাড়িতে কাজ করতে শুরু করেন তিনি । স্বপ্নার অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে ডিম ভুনা করতে দেরি হওয়ায় হাতে রুটি বানানোর কাঠের বেলন দিয়ে আঘাত করে হাত ভেঙে দেয় পুলিশ সদস্য শাহেদের স্ত্রী সুইটি বেগম। পরে কাপড় পরিস্কার করতে বললে ভাঙা হাতে নিয়ে পারবে না জানালে ফের কাঠের বেলন দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয় তাকে। মারধরের একপর্যায়ে চোখের ওপরে ও মাথা ফেটে যায় স্বপ্না আক্তারের। এ সময় চিৎকার করলে ফ্রিজে থাকা দুধের জমাট বোতল দিয়ে সারা শরীরে পিটিয়ে জখম করা হয় স্বপ্নাকে। মারধরের পর আহত স্বপ্নাকে দেওয়া হয়নি কোনো ধরনের চিকিৎসা সেবা। এ ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকিও দেয় সুইটি বেগম। এ ঘটনার পর একটি রুমে আটকে রাখা হয় স্বপ্নাকে ।
তিনি জানান, সাভারে পরিবারের অন্য কোনো সদস্য না থাকায় শুক্রবার সকালে সুযোগ পেয়ে ওই বাসা থেকে পালিয়ে কলোনী এলাকার একটি মোটর গ্যারেজ আশ্রয় নেন স্বপ্না । পরে স্থানীয়রা তাকে সাভার মডেল থানায় নিয়ে এসে একটি অভিযোগ দায়ের করেন । এ সময় স্বপ্না বারবার বলতে ছিলেন, ওই বাসায় আমাকে আর পাঠাবেন না । ওরা আমাকে মেরে ফেলবে । স্বপ্না আরও অভিযোগ করেন, দেড় বছরের বেশি সময় ধরে পুলিশ সদস্য শাহেদ ও সুইটি দম্পতির বাসায় কাজ করেন তিনি । বিভিন্ন সময় তাকে অমানবিক নির্যাতন করতেন সুইটি বেগম । মাসখানিক আগেও মারধর করে নাক ফাটিয়ে দেওয়া হয় সপ্নার ।
স্বপ্না জানান, দেড় বছর গৃহকর্মীর কাজ করে তিনি পেয়েছেন মাত্র ১৩ হাজার টাকা । কিছুদিন আগে মায়ের অসুস্থতার খবর শুনে যেতে চাইলে যেতে দেওয়া হয়নি স্বপ্নাকে ।এ ঘটনায় কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি সুইটি বেগম। সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের শিকার স্বপ্না নামের একজন সাভার লিখিত অভিযোগ দিয়েছে । তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
Leave a Reply