সংবাদ রিপোর্ট: জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২২ এর কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন সাভার সরকারী কলেজের শিক্ষক ড. এ. কে. এম. সাঈদ হাসান। তিনি বর্তমানে সাভার সরকারী কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জানা যায়, চলতি বছরের মার্চে উপজেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা দিয়ে শিক্ষা সপ্তাহ প্রতিযোগিতা-২০২২-এর আয়োজন শুরু হয়। সেখানে বিজয়ীদের জেলা পর্যায়ে, এরপর বিভাগীয় ও সর্বশেষ গত ৫ ও ৬ জুন ঢাকায় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেখানে ১৫ ক্যাটাগরিতে সাংস্কৃতিক কারিকুলামসহ মোট ২১৩ জনকে ২০২২ সালের বর্ষসেরা ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২১ জুন মঙ্গলবার শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশসেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান, দেশসেরা শিক্ষক, শ্রেণি শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রতিযোগীতায় সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী নির্বাচনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফলাফল, শিক্ষামূলক গবেষণা, শিক্ষকদের শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার, সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরি ও মূল্যায়ন দক্ষতা, সহপাঠক্রমে সম্পৃক্ততা, নিয়মিত পাঠদান, পাঠপরিকল্পনা অনুসরণ, ভাষা শিক্ষাদানে শিক্ষককের কৌশল ও যোগ্যতা, কো-কারিকুলার কার্যক্রম ইত্যাদি বিবেচনা করা হয়। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ড. এ. কে. এম. সাঈদ হাসান বলেন, প্রতিযোগীতায় আমার একাডেমিক সার্টিফিকিটের উপর মার্ক ছিলো, পিএইচডি করেছি তার উপর মার্ক পেয়েছি এরপর সৃজনশীল পরিক্ষার যে প্রশ্ন করি যেমন প্রশ্ন সেটাপ, মডারেটর, পাওয়ার পয়েন্ট ক্লাস, শিক্ষক বাতায়ন, গুগুল থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরীসহ বিভিন্ন দক্ষতার ভিত্তিতে মার্কস দেয়া হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সাথে মেশা, শিক্ষকদের সাথে মেশা ও অভিভাবকদের সাথে মেশাসহ বিভিন্ন বিষয়েও মার্কস ছিলো। আমি একশ মার্কের মধ্যে ৯৪.৫ পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, প্রথমে কলেজ থেকে একটি কমিটি করেছিলো। সেই কমিটি যাচাই বাছাই করে আমাকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক সিলেক্ট করে উপজেলায় পাঠায়। সেখানে বিভিন্ন কলেজ থেকে আসা শিক্ষকদের মধ্যেও শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় আমাকে জেলা পর্যায়ে পাঠায় এবং জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হওয়ায় বিভাগীয় পর্যায়ে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে দেশের ৮টি বিভাগ থেকে ৮ জন এবং ঢাকা মহানগরকে একটি বিভাগ ধরে ১ জনসহ ৯ জনের মধ্যে প্রতিযোগীতা হয়। সেখানে বিভিন্ন বিষয় যাচাই বাছাই করে আমাকে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষ নির্বাচিত করা হয়েছে। আমার ২৬ টি প্রকাশনা রয়েছে। আমার নিজস্ব একটি বই রয়েছে যেটা জার্মানীর ল্যান্ডমার্ট একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে। অনুভুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার আগে থেকেই ইচ্ছে ছিলে মানুষের সেবা করা। সেই সেবা হিসেবে আমার প্রথম ইচ্ছে ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া। সেখান থেকেই আমার চেষ্টা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমি হতে পারিনি, কলেজ শিক্ষক হয়েছি। আমার বাবা একজন সরকারী চিকিৎসক ছিলেন, তিনি মানুষের সেবা করতেন। সেখান থেকেই আমি স্পৃহা পেয়েছি, অনুপ্রেয়না পেয়েছি যে আমি মানুষের সেবা করবো। আমার পরিবারের লোকজন চেয়েছিলো যে আমিও চিকিৎসক হই, কিন্তু সেটা হয়নি। পরবর্তীতে নিজেই চিন্তা করেছি মানুষের সেবা দেয়ার জন্য শিক্ষক হওয়া দরকার। ইচ্ছা ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য। এজন্য পিএইচডি করেছি, ডক্টরেট করেছি, এমএড করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৯৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে শিক্ষকতা শুরু করেন ড. এ. কে. এম. সাঈদ হাসান।