সংবাদ রিপোর্ট: সমালোচনা ও বিতর্কের কারণে সাভার পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের গেন্ডা মহল্লায় নির্মানাধীন সাভার ল্যাবরেটরি কলেজ ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে চিঠি দিয়েছে সাভার পৌরসভা। পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুল গনি সোমবার দুপুরে এ পত্র জারি করেন। চিঠিতে নকশার সমস্ত কাগজ নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে পৌরসভায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া পৌরসভার একজন প্রকৌশলীকে ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে সরজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাভার পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুল গনি জানিয়েছেন, নকশা বহির্ভূতভাবে বিল্ডিং কোড না মেনে এই বহুতল ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। বাণিজ্যিক এই ভবনের চারপাশে ১০ ফিট করে জমি ছাড়ার কথা থাকলেও তারা একটুও ছাড়েনি। পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী শরিফুল ইমাম বলেছেন, সাততলা অনুমোদন নিয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজে শুরু থেকেই অনিয়ম করা হয়েছে। ২ পাশের ভবন মালিকরা এতে ক্ষতিগ্রস্ত। নকশা বহির্ভূত বাড়তি অংশ ভেঙে ফেলা হবে প্রয়োজনে। পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান খান মুরাদ বলেছেন, ওই ভবনের জমি নিয়েও সমস্যা রয়েছে। কোনরকম নকশা না মেনে তারা কাজ করছে। রাস্তায় মালামাল রেখে লোকজনের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এদিকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ( রাজউক) বলছে, নিয়ম না মেনে এই ভবন নির্মাণ হচ্ছে। একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হলেও তারা জবাব দেয়নি। সাভার ল্যাবরেটরী কলেজ ভবন নামের এই ভবনের নির্মাণ কাজের শুরুতেই দুইপাশের দুটি বাড়ির দেয়ালের ব্যাপক ক্ষতি করা হয়েছে। নকশা অনুযায়ী চারপাশে কোথাও এক চুল পরিমাণ জায়গাও ছাড়া হয়নি। বরং সুয়ারেজ লাইন করা হয়েছে একেবারেই সড়কে লাগিয়ে। বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার এবং খুঁটিও আছে ঝুঁকিতে। ব্যস্ততম সড়কের উপরে বালু, ইট ও রড রেখে যানবাহন এবং জনসাধারণ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। রাজউকের ইন্সপেক্টর মাসুদ আহমেদ সোমবার জানিয়েছেন, সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে ভবনের নকশা বহির্ভূত অংশ প্রয়োজনে ভেঙে ফেলা হবে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এজন্য কাজ শুরু করেছে। অবশ্য স্থানীয়রা দাবি করেছেন, তারা অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে বারবার প্রতিবাদ জানিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না। অপরদিকে স্থানীয় আব্দুল করিম নামের এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য নোটিশ দিয়েছে। এর আগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশকে চিঠি দিয়েছে। তবে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি, কৌশলে এড়িয়ে গেছে। আবার আদেশ পেয়েও নির্মাণাধীন ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেনি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। তবে তারা ওই ভবনের জন্য নতুন করে আবেদিত কোনো সংযোগ দিচ্ছে না। অন্যদিকে আবাসিক এলাকায় এ ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায় বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয়রা। গত দুই মাস ধরে রাত দিন পর্যায়ক্রমে এই ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে সাভার ল্যাবরেটরি কলেজের প্রিন্সিপাল জাহাঙ্গীর আলম সোমবার সকালে দাবি করেছেন , তারা পৌরসভার নকশা অনুযায়ী কাজ করছেন। তবে নির্মাণ সামগ্রী রাখায় কিছু সমস্যা হয়েছে। আশপাশের যাদের দেওয়াল ভেঙেছে সেগুলো করে দেওয়া হয়েছে। যদিও সরজমিনে তার কথার কোন সত্যতা মেলেনি।
Leave a Reply