আশুলিয়া প্রতিনিধি: আশুলিয়ায় ইউপি নির্বাচনের দিন ইউপি সদস্যপ্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থকদের মারধর করে গুরুতর আহত করার ঘটনায় আশুলিয়া থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের হয়েছে আশুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাদবরের বিরুদ্ধে। ১২ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম। ৫ম ধাপের ইউপি নির্বাচন ৫ জানুয়ারির ঘটনায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১০ জানুয়ারি আশুলিয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামীরা হলেন, আশুলিয়ার আড়াগাও এলাকার কামাল উদ্দিনের ছেলে রাসেল ওরফে স্যুটার রাসেল (৩০), বেলমা এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোঃ সোহেল পালোয়ান (৩২), আড়াগাও এলাকার আলী আক্কাস মন্টুর ছেলে মোঃ সাদ্দাম হোসেন (৩০), একই এলাকার মৃত জুলমত মাদবরের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৫), বেলমা এলাকার আমেদ আলীর ছেলে মোঃ আবু সাঈদ (৪০), আড়াগাওয়ের আলমাসের ছেলে রোকন (৩২), মহিদুজ্জামানের ছেলে রাহি (২৮), নাজিমুদ্দিনের ছেলে মোঃ ওয়াকিল (৩০), কাজীমুদ্দিনের ছেলে মোঃ মোশাদ্দিক (২৬), মৃত রহমত আলীর ছেলে মোঃ আমজাদ হোসেন(২৫), মৃত জিন্নত আলীর ছেলে মাসুদ রানা (৩৫) এবং অজ্ঞাত অনেকে।
মামলার বাদী ইউপি সদস্য প্রার্থী মোঃ আব্দুল খালেকের এজাহার থেকে জানা যায়, গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন দুপুর ১২ টার দিকে আশুলিয়া ইউনিয়নের আড়াগাও এলাকায় ভোটকেন্দ্র আড়াগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০০ গজ উত্তরে তার এজেন্টদের বেধড়ক মারধর করে যুবলীগ নেতা রাসেল মাদবর ও তার সহযোগীরা। এ সময় গুরুতর আহত হন ইউপি সদস্য প্রার্থী আব্দুল খালেকের এজেন্ট মোঃ হালিম, ভাগিনা শামসুল আলম, ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া হামলার শিকার হওয়া বাকি এজেন্টরা হলেন, জাহের, সেলিম, রকি ও শিপন। অভিযুক্তরা রামদা, লোহার রড, চাপাতি, জিআই পাইপ, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ছিল। সংবাদ পেয়ে আব্দুল খালেক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাকেও হুমকি প্রদান করে অভিযুক্তরা চলে যায়।
জানা গেছে, আশুলিয়ার ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্যপ্রার্থী খালেকের প্রতিপক্ষ মোরগ মার্কাপ্রাপ্ত লিটন মাদবরের পক্ষে কেন্দ্রে ঢুকে জোর করে মোরগ মার্কায় জাল ভোট দেন রাসেল মাদবর ও তার সহযোগীরা। এ কাজে বাঁধা প্রদান করলে ফুটবল মার্কাপ্রাপ্ত আব্দুল খালেকের সমর্থকদের হুমকি দেয় তারা। পরে কেন্দ্র থেকে বের হলে তাদের উপর স্বসস্ত্র হামলা করে অভিযুক্তরা। গুরুতর আহতদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সর্বশেষ মঙ্গলবার তাদের হাসপাতাল থেকে বাসায় আনা হয়েছে। এখনো তাদের ক্ষতস্থানের সেলাই খোলা হয়নি।
এ ব্যাপারে বাদী আব্দুল খালেক বলেন, নির্বাচনের আগে থেকেই তারা হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। শেষমেষ তারা অঘটন ঘটিয়েই ফেলল। নির্বাচনের দিন এ ঘটনা ঘটায় ভোটাররা ভয়ে ভোট দিতে পারেনি। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখতে অনুরোধ করেছিলাম কিন্তু আমার কথা কেউ শোনেনি। আহতদের নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত থাকায় আমি ৮ জানুয়ারি আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। পরে ১০ তারিখ মামলা রেকর্ড হয়। অবশ্য অভিযোগ প্রসঙ্গে আশুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাদবর বলেন, আমার নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমি ঐদিন আশুলিয়ার দোসাইদ কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট ছিলাম। মামলায় উল্লেখিত ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। ১১ জানুয়ারি মঙ্গলবার আমাদের সবার জামিন হয়েছে। আমি শুনেছি আমাদের সাথে আপোষ করতে চাচ্ছে বাদিপক্ষ। আমরা আপোষ করতে চাইনা।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, আমাদের তদন্ত চলছে। তদন্ত স্বাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply