আশুলিয়া প্রতিনিধ: আশুলিয়ায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসক ছাড়াই ‘ভুয়া’ নার্স ও আয়ার মাধ্যমে এক নবজাতক প্রসবের চেষ্টার পর মৃত নবজাতক ভুমিষ্ঠ হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি তারা চিকিৎসককে খবর দিলে চিকিৎসক পৌছানোর পূর্বেই শিশুটি জন্ম নেয়। শিশুর স্বজনদের দাবি নার্সদের কারণেই শিশুটির মৃত্যু ঘটেছে। ২৩ অক্টোবর রবিবার দুপুরে আশুলিয়ার শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার নাগরিক হাসপাতালে এ নবজাতক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রোগীর স্বজনরা জানান, সকাল ৯ টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হন ফারহানা। পরে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তার মৃত সন্তান প্রসব করান উপস্থিত নার্স ও আয়া। এর আগে ভর্তি হয়েই এই হাসপাতালেই আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে দেখা গিয়েছিল যে বাচ্চা সুস্থ সবল ছিল। ফারহানার মা বিবি ফাতেমা বলেন, আমরা বারবার বলেছি ডাক্তারকে খবর দেন তবুও কোন ডাক্তার আসেনি। দুইজন নার্স ও একজন আয়া মিলে চেষ্টা করতে থাকে বাচ্চা প্রসবের। এর আগে আমরা সিজারিয়ান পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসব করতে চেয়েছিলাম। সেই হিসেবে আমার মেয়েকে ভর্তিও করাই। পরে নার্স ও আয়া মিলে আমার মেয়েকে নরমাল পদ্ধতিতে বাচ্চা ডেলিভারি করে। অপারেশন থিয়েটারে কোন ডাক্তার ছিলনা। দুই নার্স মিলে টেবিলের উপর উঠে আমার মেয়েকে চাপ দিয়ে ধরে। চাপাচাপির কারণেই এই বাচ্চাটা মারা গেছে। ডাক্তারের কথা জিজ্ঞেস করলেই তারা বলে, এই ৫ মিনিট, এই ১০ মিনিট, এই তো হয়ে গেছে। সকাল থেকে এসে আল্ট্রার ডাক্তার ছাড়া আর কোন ডাক্তার আমরা পাইনি। সে সময় উপস্থিত নার্সদের সাথে কথা বলে জানা যায় কারোরই এ বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণ বা সনদ নেই। সনদ ছাড়াই এই হাসপাতালে তারা নার্সের পদে চাকরি করে আসছিলেন। ভুক্তভোগী ফারহানা বলেন, আমার বাচ্চাটাকে মেরে ফেলা হয়েছে আমি এর বিচার চাই। নার্স পরিচয়দানকারী ফারজানা বলেন, আমরা সিজারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখন বাচ্চাটা বেরিয়ে গেছে, আমরা শুধু ধরেছি। আমি এসএসসি পাশ করেছি, আমার নার্সিং কোন সার্টিফিকেট নেই। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মো আনিছুর রহমান বলেন, আমি এই হাসপাতালের আরএমও পদে আছি। সকালে আমি রোগী ভর্তি করতে বলি। আল্ট্রাতেও শিশুকে সুস্থ দেখা গেছে। তবে শিশুটি কেন মারা গেল আমি জানিনা। বাচ্চা প্রসবের পর আমাকে নার্সরা জানিয়েছে যে বাচ্চাটির মৃত প্রসব হয়েছে। আমাকে কেউ ডাকেনি। আমি নিচেই অন্য রোগী দেখছিলাম। সার্জনকে খবর দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি এসে পৌছতে পারেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল পরিচালক মালেক হোসেন বলেন, নার্সদের অভিজ্ঞতা সনদ রয়েছে। রোগীর লেবার পেইন উঠেছে গত কালকে, উনি আসছে আজকে সকালে। উনাকে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে সিজার করার। সার্জন আসার আগেই ডেলিভারি হয়ে গেছে। এখানে তো আমাদের কারও হাত নাই। এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সায়েমুল হূদা বলেন, রোগী যদি অভিযোগ নাও করে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
Leave a Reply