ধামরাই প্রতিনিধি : এক হাতে মায়ের ছবি। অন্য হাতে মাইক্রোফোন ধরে মাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন মধ্যবয়সী এক ছেলে। মায়ের বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। গত ১০ মে তার মা সোনা ভানু (৮০) হারিয়ে যায়। এরপর থেকেই গ্রামে, গঞ্জে, হাটে বাজারে মায়ের সন্ধান করছেন। তবে এখনও খুঁজে পাননি। ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নের ধানতারা বাজারের দিকে দেখা মেলে আব্দুল মালেক নামে ওই ব্যক্তির। চার ভাইবোনের মধ্যে ছোট তিনি। এক ভাই মারা গেছেন, আরেকজন চাকরি করেন, বোন থাকেন শ্বশুর বাড়ি। মা থাকতেন ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের ছোট বাইল্লা গ্রামে বড় ভাইয়ের কাছে। ৯ মে বাড়ি থেকে বের হয়ে একাই তার মা চলে যান টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে তার নানার বাড়ি। পরের দিন বাড়ি ফেরার কথা বলে বের হন। তবে আর ফেরেননি। এরপর থেকেই মায়ের খোঁজে ঘুরছেন ছেলে।
আব্দুল মালেক জানান, তার মা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তবে একা চলাফেরা করতে পারতেন। সেদিন মির্জাপুরে নানার বাড়িতে যান তিনি। একদিন সেখানে থাকার পর পরেরদিন তিনি বাড়ি ফিরতে বের হন। তবে বিকেল হলেও বাড়ি না ফেরায় খোঁজ নিলে জানতে পারেন সকালেই বেরিয়ে পড়েছেন তিনি। এরপর ২ মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মায়ের খোঁজ পাননি। মাকে খুঁজতে থানায় জিডি, আশপাশের সকল এলাকায় খোঁজাখুজি, মাইকিংসহ কোনো চেষ্টার বাকি রাখেননি। তবুও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি ধানতারা বাজারে মায়ের জন্য পোস্টার হাতে নিয়ে মাইকিং করতে দেখা যায় তাকে। কথা হয় তার সঙ্গে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আব্দুল মালেক বলেন, আমাদের বাবা নেই। মাই একমাত্র অভিভাবক। তাকে হারিয়ে ফেলেছি। খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা মায়ের সন্ধান চাই। তাই খুঁজে বেড়াচ্ছি। থানায় অভিযোগ করেছি, তারাও কিছু বলতে পারেনি। এখন মানুষের কাছে ঘুরে ঘুরে মাকে খুঁজছি। আমরা আমার মাকে আমাদের কাছে ফিরে পেতে চাই।
ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। পরিবার জানিয়েছে তার বয়স ৭৫-৮০ বছর। গায়ের রং শ্যামলা, নিখোঁজের সময় তিনি শাড়ি কাপড় পরিহিত ছিলেন। তার হাতে কাপড়ের গাট্টি ছিল। তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীনও ছিলেন। তাকে খুঁজতে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি প্রচার করা হয়েছে। তার সন্ধান চলছে।
Leave a Reply