1. kamruzzaman78@yahoo.com : kamruzzaman Khan : kamruzzaman Khan
  2. ssexpressit@gmail.com : savarsangbad :
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অতিথি পাখি মুখরিত

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০২২

সংবাদ ডেস্ক: অতিথি পাখি মুখরিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। শীতের শুরুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) যেনো এখন অতিথি পাখির স্বর্গরাজ্য। লাল-শাপলার জলাশয়জুড়ে এখন হাজারো অতিথির মিলনমেলা। শীতের বার্তা নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) লেকগুলোতে বরাবরের মতো এসেছে পরিযায়ী পাখি। লেক ছাপিয়ে পাখির কলকাকলি, ঝাঁকে ঝাঁকে বিচরণ, জলকেলি আর খুনসুটিতে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসা অতিথি পাখির সৌন্দর্যে মুগ্ধ ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পাখি প্রেমিক দর্শনার্থী। ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে পাখির অভয়ারণ্য খ্যাত এ ক্যাম্পাস। ২২ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকালে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট চত্বর ঘেঁষা লেকে প্রায় হাজারেরও বেশী পাখি দেখা গিয়েছে। রক্তকমল শাপলার মধ্যে সেই সুদূর সাইবেরিয়া অঞ্চলে থেকে আসা রকমারি অতিথি পাখির বাহারি খেলায় মেতে ওঠা আকর্ষণীয় দৃশ্যে লেকগুলো জানান দেয়, ক্যাম্পাসের এক অনন্য প্রকৃতি। হিমালয়ের উত্তরের সুদূর সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপালে এ সময়টায় তুষারপাত হয়। তুষারপাতে পাখিরা মানিয়ে নিতে না পেরে বাংলাদেশের মতো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে। শীত বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্যাম্পাসে বাড়তে থাকে অতিথি পাখির সংখ্যা। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির অর্ধেকটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পরিযায়ী পাখির উপস্থিত লক্ষ্য করা যায়।

প্রধানত, দুধরনের অতিথি পাখির আগমন ঘটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এক ধরনের পাখি ডাঙায় শুকনো স্থানে বা ডালে বসে বিশ্রাম নেয়। আরেক ধরনের পাখি বিশ্রাম নেয় পানিতে। ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি পাখির দেখা মেলে। শীতের সময় ক্যাম্পাসে ১২৬ প্রজাতির দেশীয়, ৯৮ প্রজাতির বিদেশি মিলিয়ে ২০৬ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। এর মধ্যে ৭৮ প্রজাতির পাখি নিয়মিত ক্যাম্পাসে অবস্থান করে। পানিতে বিশ্রাম নেওয়াদের বেশিরভাগই হাঁসজাতীয়।
এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, পান্তামুখী, পাতারি, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক, পাতারি হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা ও কামপাখি অন্যতম। এছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোটনগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি,বামুনিয়া হাঁস, লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল, কাস্তে চাড়া প্রভৃতি পাখিও হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসে এই ক্যাম্পাসে।বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় প্রায় ১৪টি লেকের মধ্যে পরিবহন চত্বরের পাশের লেক, ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের পাশের লেক, রেজিস্ট্রার ভবনের সামনের লেক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন লেকে অতিথি পাখির সমাগম সবচেয়ে বেশি। সবুজ এই ক্যাম্পাসে হেমন্তের আমেজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিথি পাখির আনাগোনায় মুখর হয়ে উঠতে শুরু করে জলাশয়গুলো। শীতের সময় প্রতিদিনই দেখা মেলে ঝাঁকে ঝাঁকে হাজারো বাহারি রঙের অতিথি পাখি। কনকনে শীতের সকালে সোনামাখা রোদে লেক গুলোতে হাজারো অতিথি পাখির এই অবাধ বিচরণ, সারাদিন খুনসুটি, ক্যাম্পাসের আকাশে মুক্ত ডানায় ভর করে বাতাসে গা ভাসিয়ে দলবেঁধে হেলে-দুলে উড়ে বেড়ানো শীতের জাহাঙ্গীরনগরের সাধারণ চিত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক পাখিমেলার আহ্বায়ক ও পাখি গবেষক ড. মো. কামরুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে এর প্রতিবেদক-কে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত পরিযায়ী পাখির যে সংখ্যাটা এসেছে পাখির সংখ্যা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করছি সময়ের সাথে পাখির সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। এসময় তিনি আরোও বলেন, অতিথি পাখিদের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতি-বছরের ন্যায় এবারও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনি আরও বলেন,ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ধারণা করছি,এ বছরের অতিথি পাখির সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ :