সংবাদ ডেস্ক: ‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১২তম প্রজাপতি মেলা। সারাদিন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে চলে এই উৎসব। ২ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ, প্রজাপতি মেলার আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনোয়ার হোসেন, বন অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ, কিউট প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ মাতলুব আক্তার, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান প্রমুখ। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক বলেন, প্রজাপতি নানাভাবে আমাদের উপকারে আসে। এছাড়া প্রকৃতিতেও প্রজাপতি অনেক অবদান রাখে। পাশাপাশি প্রজাপতির সৌন্দর্য আমাদের মনকে আপ্লুত করে। এছাড়া প্রজাপতি না থাকলে পরাগায়ন হবে না। তাই প্রকৃতিতে প্রজাপতিকে টিকিয়ে রাখতে হবে। তার প্রেক্ষিতে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর প্রজাপতি মেলা আয়োজন করা হয়। মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রজাপতি হলো একটি ছোট্ট নান্দনিক প্রাণী যা মানুষকে আনন্দ দেয়। দিনে দিনে এই প্রাণীটি প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। পূর্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১০ প্রজাতির প্রজাপতি পাওয়া যেত। এখন সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫২ প্রজাতিতে। গাছপালা বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রজাপতি রক্ষা করতে হবে। কেননা প্রজাপতির পরাগায়নেই উদ্ভিদ ও গাছের সৃষ্টি। তাই মানুষের মাঝে প্রজাপতির গুরুত্ব বুঝানো এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাদের এই মেলার আয়োজন। তিনি আরও বলেন, শিশুদের যদি প্রজাপতির গুরুত্ব অনুধাবন করানো যায় তাহলে তারা প্রজাপতির গুরুত্ব বুঝতে পারবে। প্রজাপতির গুরুত্ব বুঝতে পারলে তারা প্রজাপতি রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারবে। এজন্য শিশুদের জন্য ছবি আঁকা, প্রজাপতি ঘুড়ি ওড়ানো, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এবার শিশুদের জন্য কাকতাড়ুয়া পাপেট দলের পরিবেশনায় প্রজাতির গল্পে পাপেট শো আয়োজন করা হয়েছে। এ বছর প্রকৃতি সংরক্ষণে সার্বিক অবদানের জন্য এবারের প্রজাপতি মেলায় তরুপল্লব সংগঠনকে বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী দীপ্ত বিশ্বাসকে বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। প্রজাপতি মেলার দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল- প্রজাপতি বিষয়ক অ্যাওয়ার্ড প্রদান, প্রজাপতিবিষয়ক ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা (শিশু-কিশোরদের জন্য), প্রজাপতি ও প্রকৃতিবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা (শিশু-কিশোরদের জন্য), প্রজাপতির আলোকচিত্র প্রদর্শনী, প্রজাপতিবিষয়ক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির হাট দর্শন, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতিবিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান। উল্লেখ্য, প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজাপতি মেলা আয়োজিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ‘কীটতত্ত্ব’ এই মেলার আয়োজন করে।
Leave a Reply